
প্রিন্ট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩১ পিএম

যুগান্তর প্রতিবেদন, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম
-67dee92a9889c.jpg)
আরও পড়ুন
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জের ভুলতা গাউছিয়া, কাঞ্চন সেতু, মুড়াপাড়া, রূপসী, তারাবো, ফজুরবাড়িসহ আশেপাশের এলাকার যানজট নিরসনে শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করেছেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন। যানজট নিরসনে শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবীরা সফলও হয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে জমে ওঠা রূপগঞ্জের মার্কেট, শপিংমল, অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ব্যস্ত, লোকে লোকারণ্য। জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। কখনো যানজট রূপ নিচ্ছে তীব্র ও স্থায়ী যানজটে। থেমে থেমে চলছে গাড়ির চাকা। এতে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কর্মক্ষম মানুষ। এতে অপচয় হচ্ছে অর্থ ও সময়। ভোগান্তিতে পড়ছেন ঘরমুখী সাধারণ মানুষ।
ঠিক সেই মুহূর্তে মানুষের ভোগান্তি লাঘবে যানজট নিরসনে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। পুরো উপজেলায় প্রতিটি মোড়, চৌরাস্তা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নিয়োগ দিয়েছেন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী ট্রাফিককর্মী। ফলে কমেছে যানজট। কিছুটা স্বস্তি নিয়ে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করছেন মানুষ।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের লোগো সম্বলিত হলুদ-টিয়া রংয়ের কটি পরিহিত এক হাতে ছাতা, অন্য হাতে বাঁশি নিয়ে এসব শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। রাতে জ্বলছে তদের হাতে থাকা লাইট। নিয়োজিত সবাই স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। দায়িত্ব পালন করছেন স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরাও।
ঢাকার উপকণ্ঠে অবস্থিত রূপগঞ্জ উপজেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে গড়ে উঠেছে শত শত শিল্পকারখানা, পাইকারি বাজার, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
কর্মসংস্থানের সুবিধা থাকায় স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি লাখ লাখ কারখানা ও গার্মেন্টের শ্রমিক ও কর্মচারী এখানে বসবাস করেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এখানে বাণিজ্য করতে আসে।
রূপগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলা নির্মাণাধীন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও গাজীপুর-মদনপুর বাইপাস সড়ক, কাঞ্চন ব্রিজ থেকে ডেমরা সড়কের সম্প্রসারণের কাজ চলছে। একদিকে সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ চলমান। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় বিকল্প রাস্তা না থাকায় যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
দেশের পূর্বাঞ্চলীয় ১৮ জেলার মানুষ এ উপজেলার ওপর দিয়ে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করেন। এ অবস্থায় রূপগঞ্জ উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আরও বাড়ানোর দাবি বিশেষজ্ঞদের।
সমাজকল্যাণ যুব সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ইফতেখার ভুইয়া রিদ্বীন জানান, শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে কাজ করছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্ব পালন করছে। তাতে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও গাড়িতে মালামাল ওঠা-নামাসহ নানা অনিয়ম বন্ধ হয়েছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবী ঐক্য পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবীদের ট্রাফিক দায়িত্ব পালনে যানজট নিরসনের পাশাপাশি চাঁদাবাজি ছিনতাইসহ অপরাধ প্রবণতা কমেছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম এ মোমেন বলেন, রূপগঞ্জে মহাসড়ক ও অভ্যন্তরীণ সড়কের যানজট নিরসনে এবারই প্রথমবারের মতো কোনো উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন, প্রশংসিতও হয়েছেন। তাতে পথচারী, ঈদে ঘর ফেরা মানুষ ও পরিবহণ যাত্রীরা সুফল পাচ্ছেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এবারের রমজান ও ঈদে ভোগান্তি ছাড়া মানুষের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঈদের দিন পর্যন্ত শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবীরা সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করবে। তাদের অধিকাংশই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।