
প্রিন্ট: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫৫ এএম

কিশোরগঞ্জ ব্যুরো
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৮ এএম

আরও পড়ুন
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনা নদীতে রয়েছে মোশাররফ হোসেন মিন্টুর অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু বহনে ব্যবহৃত ৫টি বাল্কহেড-যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর বিষয় হচ্ছে গত বছরের ২২ মার্চ মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় যে যাত্রীবাহী ট্রলারডুবিতে ৮ নারী-পুরুষের মৃত্যু হয়েছিল, সেই বাল্কহেডের মালিকও ছিল এই মিন্টু। এ কারণে মেঘনা নদী থেকে আটক করে মিডিয়ার কাছে স্বীকার করেও শেষ পর্যন্ত পুলিশ বাল্কহেডটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
শুক্রবার দৈনিক যুগান্তরের তৃতীয় পৃষ্ঠায় ‘ভূমিদস্যুতা থেকে শত শত কোটি টাকার মালিক আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টু’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নরসিংদী জেলাবাসীর মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে এ কাহিনি। আর এ সূত্র ধরেই একে একে বেরিয়ে আসছে তার ভয়ংকর ও অবিশ্বাস্য সব অপকর্মের তালিকা-কাহিনি।
মেঘনা নদীর কিশোরগঞ্জে ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল সীমানায় ইজারা নেওয়া ছাড়াই পতিত হাসিনা সরকারের দীর্ঘ ১৪ বছর ৬টি বালু তোলার ড্রেজিং বোট বসিয়ে প্রতিদিন কয়েক লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলনের রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে গেছে ভৈরবের সাবেক কাউন্সিলর মিন্টু। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভৈরব, নরসিংদীর রায়পুরা থেকে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল পর্যন্ত মেঘনার বুকজুড়ে বিস্তৃত ছিল ভৈরব আওয়ামী লীগের অন্ধকার জগতের ‘গডফাদার’ মিন্টুর বালু উত্তোলন বাণিজ্যের সাম্রাজ্য। এমন অপরিনামদর্শিতার কারণে হুমকির মুখে পড়ে মেঘনা সেতুর ওপর নির্মিত সেতু ও দুপাশের বন্দর বাজার, আশপাশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও জনপদ। এ বালুখেকোর সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে গুম-খুন হওয়ার ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ অভিযোগ করারও সাহস পেত না। এমনকি প্রশাসনও কাজ করেছে তার ‘পেইড’ এজেন্সি হিসাবে।
এমন অবাধ বালু বাণিজ্যের কারণে জেলেদের নদীতে মাছ ধরার কাজে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি নদী তীরবর্তী ফসলি জমিও আগাম তলিয়ে যেত। ইতোমধ্যে ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে সরাইল, ভৈরব ও রায়পুরা উপজেলার অন্তত ১০/১২টি গ্রাম। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নরসিংদী জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিটির একাধিক সভায় আলোচিত হলেও অদৃশ্য কারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এতে দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে প্রতিদিন চলেছে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকার অবৈধ বালু উত্তোলন বাণিজ্য।