চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১৬ প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

নাঈম হোসেন, দক্ষিণাঞ্চল
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১০:০৮ এএম

পটুয়াখালী সদর উপজেলার মৌকরন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী রাইসুল ইসলাম সেলিমের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৬ প্রকল্পের কাজ না করেই প্রায় ৩০ লাখ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এ ঘটনায় গত ৯ মার্চ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মৌকরন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ।
যেসব প্রকল্প থেকে চেয়ারম্যান অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সেগুলো হলো, মৌকরন বাজারে দুটি রাস্তা পাকাকরণ, দুটি ড্রেন নির্মাণ, বালুভরাট ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন, ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের মাহমুদুল্লাহ হাওলাদারের বাড়ি থেকে হক হাওলাদারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুর্ননির্মাণ, একই ওয়ার্ডের আরজেদ আলী শিকদারের বাড়ি থেকে আব্দুল হক শিকদারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা আরসিসি ঢালাই, ৮ নাম্বার ওয়ার্ডের মালেক হাওলাদারের বাড়ির সামনের পাকা রাস্তা পুর্ননির্মাণ, রব হাওলাদারের বাড়ি থেকে আনসার কাজীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুর্ননির্মাণ, শ্রীরামপুর রহমান শিকদারের বাড়ি থেকে জালাল মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ, তিন নাম্বার ওয়ার্ডের রব বেপারীর বাড়ি থেকে অমূল্য সেনের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুর্ননির্মাণ, আট নাম্বার ওয়ার্ডের মেইন সড়ক থেকে কালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা পুর্ননির্মাণ, ৭ নাম্বার ওয়ার্ডের মেইন সড়ক থেকে লতিফ মোহসেনা স্কুল পর্যন্ত রাস্তা পুর্ননির্মাণ এবং জাকির শিকদারের বাড়ি থেকে রহমান শিকদারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুর্ননির্মাণ।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ইউনিয়নের ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের আরজেদ আলী শিকদারের বাড়ি থেকে আব্দুল হক শিকদারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা আরসিসিকরণ প্রকল্পের ব্যয় দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৪৯১ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি করা হয়েছে আব্দুল হক শিকদারকে। তবে এই ব্যক্তি প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, চেয়ারম্যান সেলিমের সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগসহ পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নানাজনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ছিল। এ সুযোগে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন তিনি। এছাড়া এলজিডি সদর দপ্তরসহ ঢাকা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এবং প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
এদিকে অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালককে নির্দেশনা দিয়েছেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন।
অভিযোগকারী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাকে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হিসাবে দেখানো হলেও আমি প্রকল্প সম্পর্কে জানি না।’
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান সেলিম বলেন, ‘অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। মূলত আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তদন্ত আমি দোষী প্রমাণিত হলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জুয়েল রানা বলেন, ‘অভিযোগগুলোর বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’