অবৈধভাবে মেঘনা থেকে তোলা হচ্ছে বালু

মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০১:৩৭ পিএম

ভোলার মনপুরা উপজেলার পূর্ব-পশ্চিম পাশের মেঘনা নদীতে একাধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালু। নদীর পাড়ের খুবই কাছ থেকে তোলা সেই বালু নেওয়া হচ্ছে তীর রক্ষা বাঁধের নির্মার্ণাধীন কাজে। আর এতে হুমকিতে পড়েছে নদীর পাড়। হুমকিতের রয়েছে নির্মিতব্য বাঁধও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলটির নেতাকর্মীরা এ ড্রেজার
ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। এখন তাদের সঙ্গে মিলেছে আরেকটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
তারা মিলেমিশে এখন বালু তোলার কাজ করছে। তবে ভয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে নারাজ
স্থানীয়রা।
সম্প্রতি কয়েক দফা মনপুরার মেঘনার অংশে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকটি অংশে ১০
থেকে ১৫টি ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালু। কোথাও নদী তীরের ১০০ মিটার, কোথাও
৩০০ মিটার, আবার কোথাও আধা কিলোমিটার কাছ থেকে তোলা হচ্ছে বালু। এই সমস্ত বালু বাল্কহেডে
করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মেঘনার তীর রক্ষা বাঁধের নির্মাণ প্রকল্পে।
প্রতিবেদক বালু তোলার খবর সংগ্রহের সময় তাকে হুমকি দেওয়া হয়। ছবি ও ভিডিও
করতে গেলে বালু তোলার দায়িত্বে থাকা অস্ত্রধারীরা তাকে বাধা দেয়। এছাড়া এ বিষয়ে সংবাদ
না করার জন্য নির্দেশ দেয়।
মেঘনা থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা নিয়ে যোগাযোগ করা পানি উন্নয়ন বোর্ড
(পাউবো) ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদৌলার সঙ্গে। অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে
না বলে জানান এ সরকারি কর্মকর্তা। তিনি বলেন, গত বছর মেঘনার পাড়ের এক কিলোমিটার দূর
থেকে বালু তোলার অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেঘনার তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের কাছ থেকে বালু তোলায়
নির্মিতব্য এ বাঁধ হুমকিতে পড়বে। দ্রুতই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বাঁধটি। এতে গচ্ছা
যাবে সরকারের টাকা। পাশাপাশি নদী পাড়ে ভাঙন বাড়বে বলেও জানান তারা।
মেঘনা থেকে বালু তোলা বন্ধ করার জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের দাবি জানান
সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় বাসিন্দা রাকিব, সজিব, হেলালসহ অনেকে জানান, আগে বালু তোলার
কাজটি করতো পতিত সরকারের লোকজন। এখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লোকজন মিলেমিশে বালু তোলার
কাজটি করছে।
এ বিষয়ে মনপুরা থানার ওসি আহসান কবির বলেন, ‘অভিযোগ পেলে সরেজমিনে গিয়ে
আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিখন বনিক বলেন, ‘নদী
পাড়ের এক কিলোমিটার দূর থেকে বালু তুলতে বলা হয়েছে। তারপরও তারা যদি কাছ থেকে তুলে
তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’