
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের সংকট। এ সংকট এমন প্রবল হয়েছে যে বাধ্য হয়ে কমপ্লেক্সে তালা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বলছে, পার্শ্ববর্তী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। ঘটনাটি বরগুনার বেতাগীর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
৪০ পদের বিপরীতে একজন ডেন্টাল সার্জনসহ মোট দুজন চিকিৎসক আছেন। বাকি পদগুলো খালি। অধিদপ্তর
থেকে এরইমধ্যে কয়েক ধাপে ছয়জন চিকিৎসক পদায়ন করা হলেও মাত্র একজন যোগদান করেছেন। যোগদানের
পর থেকে ওই চিকিৎসকও আর আসেননি।
এমতাবস্থায় শুক্রবার প্রধান ফটকে তালা মেরে গণবিজ্ঞপ্তি টানিয়ে রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। যেখানে লেখা আছে, ‘পুলিশ কেইস বা মারামারি জরুরি কোনো চিকিৎসা দেওয়ার মতোন চিকিৎসক না থাকায় অন্যত্র হাসপাতালে রোগীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
আরেকটি গণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘অমিবার্য কারণে ডাক্তার না থাকায়
আন্তঃবিভাগে সকল কার্যক্রম বন্ধ আছে। জরুরি বিভাগ সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত
এবং বর্হিবিভাগে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চালু থাকবে। এ অবস্থা সাময়িক। আশা
করি সাময়িক এ অবস্থার উত্তরণ হইলেই পুর্ননিয়মে সেবা চালু থাকবে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক আসার
সঙ্গে সঙ্গেই অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যায়।
চিকিৎসা নিতে আসা বেশ কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ‘আমরা ডাক্তারের
কাছে আইছি, কিন্তু ডাক্তারই নাই। ওষুধ দিয়ে কি করমু। ডাক্তারের লেখা কাগজ ছাড়া কেমনে
ওষুধ খামু। গেটে তালা মাইরা রাখছে। তারা বলে, পাশের উপজেলার হাসপাতালে যাইতে।’
এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়্যিদ
মুহাম্মদ আমরুল্লাহ বলেন, ‘কমপ্লেক্সে কনসালটেন্ট, জুনিয়র কনসালটেন্ট, আয়ুর্বেদিক,
ডেন্টিস্টসহ মোট ৪০ জন চিকিৎসক থাকার কথা। সেখানে আমি ও একজন ডেন্টিস্ট ছাড়া আর কোনো
চিকিৎসক নেই। একজন আবাসিক চিকিৎসক থাকলেও তিনি কয়েকদিন আগে কোর্সে চলে গেছেন।’
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ‘এটা
খুবই দুঃখজনক যে চিকিৎসকরা পদায়ন পাওয়ার পর যোগদান না করেই অন্যত্র চলে যায়। শুধু বেতাগী
নয় অনেক উপজেলার অবস্থা এরকম। তবে এবার যাদের পদায়ন করা হবে তাদের এমনভাবে দেওয়া হবে
যাতে বদলি না হতে পারে।’