Logo
Logo
×

সারাদেশ

নারী হাজতখানায় তুফানের সঙ্গে পরিবারের সাক্ষাতের সুযোগ, এটিএসআই প্রত্যাহার

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম

নারী হাজতখানায় তুফানের সঙ্গে পরিবারের সাক্ষাতের সুযোগ, এটিএসআই প্রত্যাহার

বগুড়ায় আদালতে নারী হাজতখানায় আলোচিত বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ করার সুযোগ দেওয়ার ঘটনা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। আইনজীবী সহকারীসহ চার স্বজনকে আটক করে ৫৪ ধারায় আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে।

দায়িত্বে অবহেলায় আদালত পুলিশের এটিএসআই জয়নাল আবেদীনকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সোমবার বিকালে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) হোসেন মো. রায়হানকে প্রধান করে তিন সদস্যদের কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক তুফান সরকার শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি হত্যা, ধর্ষণ, ছিনতাই, মাদকসহ ১৭ মামলার আসামি। গত ২০১৭ সালে কলেজে ভর্তির নামে এক ছাত্রীকে বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ, মাসহ তাকে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া ও নির্যাতনের ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। সেই সময় জেল সুপারের কক্ষে তুফানের সঙ্গে নির্যাতিত ওই নারীকে একান্তে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি হয়।

বিদ্যুতের একটি মামলার ধার্য তারিখে তুফান সরকারকে সোমবার বিকালে বগুড়া কারাগার থেকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দোতলায় হাজতে আনা হয়। এরপর তাকে নারী হাজতখানায় রেখে দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভিতরে আইনজীবী সহকারী, তুফানের স্ত্রী, বোনসহ কয়েকজন ছিলেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে আদালতপাড়ায় হুলস্থূল পড়ে যায়। পরে তুফান সরকারকে প্রিজনভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া তুফানের স্ত্রী, আইনজীবী সহকারীসহ চারজনকে আটক করে ৫৪ ধারায় আদালতে চালান দেওয়া হয়।

বগুড়ার কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন সাংবাদিকদের জানান, হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদীনের কাছে ছিল। বিদ্যুৎ মামলার আসামি তুফান সরকারকে দুপুরে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হয়। বিষয়টি আদালতের অগোচরে ঘটে।

গত ২০১৭ সালে এক ছাত্রীকে কলেজে ভর্তির নামে বাড়িতে নিয়ে তুফান সরকার ধর্ষণ করে। পরে তার স্ত্রী, পৌর কাউন্সিলর শ্যালিকা ও অন্যরা মাসহ ওই ছাত্রীকে মারপিট করে। একপর্যায়ে নাপিত ডেকে মা ও তাকে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় শুরু হলে পুলিশ তুফান সরকারকে গ্রেফতার করে। নির্যাতিত ছাত্রীর পরিবার থানায় তুফান সরকারসহ ৯-১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

কারাগারে জেল সুপারের কক্ষে তুফানের সঙ্গে নির্যাতিত ছাত্রীর সাক্ষাত, জেলের দর্শনার্থী কক্ষে স্যালাইন পাইপের মাধ্যমে ফেনসিডিল সেবন ও বাহির থেকে নিক্ষেপের মাধ্যমে কারাগারে তুফানের কাছে ফেনসিডিল পাঠানোর ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল। এরপর তুফানকে কাসিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।

আলোচিত তুফান সরকারের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্টের পার তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা হয়। গত ২৫ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম