Logo
Logo
×

সারাদেশ

সমন্বয়কের চাঁদা দাবির ভিডিও ভাইরাল, মিথ্যা দাবি পরিবারের

Icon

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম

সমন্বয়কের চাঁদা দাবির ভিডিও ভাইরাল, মিথ্যা দাবি পরিবারের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর শাখার মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারের চাঁদা দাবি করে প্রচারিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিওতে যে বক্তব্য তুলে ধরে প্রচার করা হচ্ছে এর বিরোধিতা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য।

রোববার বিকাল সাড়ে ৫টায় একটি নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আমার গংগাচড়া থানাধীন পূর্ব খলেয়া মৌজায় ৪ একর ৫৯.৫ শতক জায়গা রয়েছে। জমিটি দীর্ঘদিন ধরে আমার দখলে থাকলেও ২০১৯ সাল থেকে আতিকুল ইসলাম, মঞ্জুরুল ইসলামসহ কয়েকজন জাল রিটের মাধ্যমে জমিটি দখল করে ও জমির উপরে ১৪৪ ধারা জারি করে।

পরবর্তীতে আমি জালচুক্তি সংগ্রহ করে সদর কোর্টে মামলা করি এবং চিফ মেট্রোপলিটন আদালত সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য সিআইডিতে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে যাচাইপূর্বক জালিয়াতি প্রমাণিত হয়। তদন্ত চলাকালীন সময়ে উক্ত দখলদাররা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন রংপুর জেলা পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসকের দপ্তরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রীর পিএ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তুহিন চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রীর অপু মুন্সি কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার বাবুসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীরা সিন্ডিকেট করে দিনে রাতে ২টি বালু উত্তোলন মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে আসছে।

প্রশাসনে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করা হলেও কয়েক দফা জরিমানা করা হয় কিন্তু জমিটি আর উদ্ধার করতে পারিনি। অন্যদিকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। তাই নিরুপায় হয়ে আমি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের দ্বারস্থ হই এবং জমিটি উদ্ধারের জন্য আমি তাদের অনুরোধ করি।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সেখানে সরেজমিন উপস্থিত হয়; কিন্তু তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে আতিকুল ইসলাম তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সেখানে হাজির হন। উপস্থিত সবাই একটি রাজনৈতিক দলের পরিচয় দেয়। পরবর্তীতে সেই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তারা উক্ত দলের কেউ নন। তারা পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য শিমূলবাগ কমিউনিটি সেন্টারে ডেকে নেয় এবং বিভিন্ন অনৈতিক অর্থের প্রলোভন দেখায়। বৈষম্যবিরোধী নেতারা তাদের প্রলোভন অগ্রাহ্য করে সেখান থেকে বের হয়ে আসে।

এ সময় গোপনে কথোপকথনের দৃশ্য গোপনে ধারণ করে; যা এডিটিং করে পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা চাঁদাবাজির ভিডিও বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে।

চক্রান্তকারীররা সুবিধা করতে না পেরে আবারো বৈষম্যবিরোধী নেতাদের ফোন দেয়। আতিকুল ইসলামের কর্মচারী বেলাল ফোন দিয়ে বৈষম্যবিরোধী নেতাদের ফোন দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও জীবননাশের হুমকি দিয়ে বলে, তোরা দুদিন টিকবি না। আমরা ক্ষমতায় আসলে তোদের উড়িয়ে দিব। সমন্বয়ক আর বেশিদিন থাকবে না, তোদের ভালোভাবে ফাঁসানোর ব্যবস্থা করতেছি।

এ পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী আজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, যারা এই অপ্রচার চালাচ্ছে তারা কোনো রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এটি করছে। তিনি তার জমি বালুখেকোদের কাছ থেকে উদ্ধার করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের রংপুরের মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকার বলেন, রংপুর নগরীর হাজিরহাট এলাকায় একটি ইকো পার্কের নামে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে আমরা চারজন সেখানে যাই। আমার উপস্থিতি দেখে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত বেলাল নামে এক ব্যক্তি নগরীর শিমুলবাগ কমিউনিটি সেন্টারে আসতে বলে। আমি সেখানে গেলে তারা বিভিন্নভাবে আমাকে টাকার অফার করেছিল, যা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে। আমরা যেন তাদের ব্যবসায় হাত দিতে না পারি, সেজন্য আমাদের ফাঁসাতে তারা এ কাজটি করেছে।

এ ব্যাপারে গ্রিন সিটি ইকো পার্কের প্রকল্প ব্যবস্থাপক বেলাল হোসেন বলেন, আমার পার্কে পুকুর তৈরিতে খনন কার্যক্রম চলছিল। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে বলে নাহিদ আমার কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। এছাড়া তার চাঁদা দাবির অনেক কল রেকর্ড আমার কাছে আছে, যা দ্রুত প্রকাশ করা হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম