
হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও জনতার ওপর হামলার মামলায় এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে তাকে শহরের তিনকোণা পুকুরপাড় এলাকায় জেলা শিক্ষা অফিসের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তিনি তরফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে ভোট দিতে আসেন।
গ্রেফতারকৃত মো. সেলিম মিয়া সদর উপজেলার লস্করপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি সুলতানশী গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও জনতার ওপর হামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হুমকি ধমকি, আধিপত্য বিস্তার এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর কবীর জানান, সেলিম মিয়া গত বছরের ২ আগস্ট হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালান। এ ঘটনায় আহত তাহির মিয়া বাদী হয়ে একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার আসামি তিনি। বুধবার জেলা শিক্ষা অফিসের সামনে ঘোরাফেরা করার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে লস্করপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম মিয়া এলাকায় পলাতক সাবেক এমপি মো. আবু জাহিরের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি এমপির লোক হিসেবে এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার করেন। নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও দলীয় প্রভাবের কারণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটিতে সদস্য হন।
এছাড়া সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও তিনি আধিপত্য বিস্তার করেন। এমপির লোক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পেত না। ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে তৎকালীন এমপি মো. আবু জাহির পালিয়ে গেলে সেলিমও আত্মগোপন করেন; কিন্তু সম্প্রতি তিনি কৌশলে প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করেন। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে বুধবার জেলা শিক্ষা অফিসে ভোট দিতে এসে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ও জনতার তোপের মুখে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।