উপাচার্যের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের নীতিগত সিদ্ধান্ত ববি শিক্ষার্থীদের

বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০০ পিএম

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক মনোভাব প্রকাশের অভিযোগ তুলে কঠোর আন্দোলনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিকেলে একটি খোলা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রভাবে মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভসহ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে তার দায় ববি প্রশাসনকে নিতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই উপাচার্যের বাসভবনের গেট ভাঙার ঘটনায় ববি প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
এছাড়াও ববি উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাব পরিহার করে শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবি তুলেছে আন্দোলনকারীরা।
অন্যদিকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে একই দিন গণস্বাক্ষর কর্মসূচি করেছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ববিসাস) সদস্যরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দাপ্তরিকভাবে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
এদিকে বুধবার ববির প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. এটিএম রফিকুল ইসলামকে বাদ দিয়ে সেই পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ড. সোনিয়া খান সনি। সদ্য সাবেক প্রক্টরের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পদত্যাগ দাবি করে আসছিল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
গণবিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেছেন, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রহসনের মিথ্যা মামলা এখনো প্রত্যাহার করেনি ববি প্রশাসন। এটা না করে স্পষ্ট প্রমাণ করেছে ববি প্রশাসন বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী না। একের পর এক অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ক্লাসরুম, আবাসন, পরিবহণ সংকটসহ ২২ দফা অতিদ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো সিদ্ধান্তে লুকোচুরি করা যাবে না। কেউ স্বৈরাচার হওয়ার ইচ্ছা করলে সচেতন শিক্ষার্থীরা দাঁতভাঙা জবাব দেবে। তাই হামলা-মামলার মতো স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব ববি প্রশাসন গড়ে তোলার জোর আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, উপাচার্যের এরকম স্বৈরাচারী মনোবৃত্তি শিক্ষার্থীদের আশাহত করেছে। বাস্তবতা স্বীকার করে তার উচিত অতিদ্রুত সকল দাবি মেনে নিয়ে আমাদের পড়ার টেবিলে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা। অন্যথায় চলমান অচলাবস্থার জন্য উপাচার্য এবং তার প্রশাসন দায়ী থাকবে।
এদিকে বুধবার দিনভর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে।
বুধবার ববির রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ড. সোনিয়াকে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ববি রেজিস্ট্রারের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এ নিয়োগ বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির দপ্তর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রবিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।