স্কুলের কমিটি নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫০ পিএম

ঢাকার ধামরাইয়ে সাহাবেলিশ্বর মোহিনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের জন্য আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মাসুদুর রহমান মাসুদ নামে (৩২) এক ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুকুর বিএনপির সভাপতি পুত্রের দখলে রাখতে আহবায়ক কমিটিতে নিজেদের লোক অন্তর্ভুক্ত করতে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা বলে জানা গেছে।
রোববার বিকাল ৫টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খেলার মাঠে। এ সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপে টানটান উত্তেজনা। জনমনে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বিক্ষিপ্তভাবে চলছে বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মহড়া।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, সাহাবেলিশ্বর মোহিনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সাবেক সভাপতি সিরাজ উদ্দিন সিরাজকে প্রভাবিত করে সুতিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. ফটো মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি পুকুর মাছ চাষের জন্য ইজারা নেন। ওই ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষক মো. আলী হুসেন রোববার বিকাল ৫টার দিকে আহবায়ক কমিটি গঠনের জন্য একটি সভা আহ্বান করেন।
এ খবর পেয়ে ফন্দি আঁটেন পুকুর ইজারাদারের পিতা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ ফটো মিয়া। তিনি বিদ্যালয়ের ওই পুকুরটি নিজেদের দখলে রাখার জন্য আহবায়ক কমিটিতে নিজেদের লোকজনকে অন্তর্ভুক্ত করতে বিপুলসংখ্যক লোকজন নিয়ে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে প্রভাব বিস্তার করেন।
বিএনপি নেতা ফটো মিয়ার পক্ষের আব্দুল আহাদ, রাকিব হোসেন ও শরীফ হোসেনসহ ১০-১২ জন সুতিপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ধামরাই উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রমিজুর রহমান চৌধুরী রুমার লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় প্রতিহত করতে গেলে বিএনপির দুই গ্রুপের লোকজনের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পালটা ধাওয়া।
সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে সুতিপাড়া ইউপি সদস্য মো. মোশারফ হোসেন ও সুতিপড়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি মোহাম্মদ শাহিন পাগলাসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। আহতদের মাঝে ইউপি চেয়ারম্যান রমিজুর রহমান চৌধুরী রুমার অনুসারী মাসুদুর রহমান মাসুদ নামে এক যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে ধামরাই আলাদিন জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সুতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান আলহাজ রমিজুর রহমান চৌধুরীর মা বলেন, অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূর্বের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. সিরাজ উদ্দিন প্রভাবিত করে পানির দরে বিদ্যালয়ের পুকুরের মাটি ক্রয় করেছে সুতিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফটো মিয়ার ছেলে আব্দুল আহাদ মিয়া।
শুধু তাই নয় নামমাত্র মূল্যে বিদ্যালয়ের ওই পুকুরটি মাছ চাষের জন্য ইজারা ও গ্রহণ করে ওই বিএনপি নেতার পুত্র। ওই পুকুরটি নিজেদের দখলে রাখার জন্য আহবায়ক কমিটিতে পক্ষের লোকজনকে অন্তর্ভুক্ত করতে ওই বিএনপি নেতা লোকজন নিয়ে ব্যাপক হারে প্রভাব বিস্তার করেন বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে। তার লোকজন আমার লোকজনের ওপর হামলা চালালে আমার লোকজন প্রতিহত করতে গেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মাঝে মাসুদ নামে আমার এক লোকের অবস্থা খুবই গুরুতর। তাকে ধামরাই আলাদিন জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। আমরা তাকে নিয়ে গভীরভাবে শঙ্কিত হয়ে পড়েছি।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা মোহাম্মদ ফটো মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। আহবায়ক কমিটি গঠন হবে মর্মে বিদ্যালয়ের সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী হোসেন আমাদের অবহিত করলে আমরা বিদ্যালয়ে আসি।
বিদ্যালয়ের পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় আহবায়ক কমিটি গঠনের জন্য অভিভাবকসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে আহ্বান করা হয়। তারা বিদ্যালয় আসার পর এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এটা আমাদের কাম্য নয়।