বিএনপি নেতার হামলায় আহত যুবদল নেতার মৃত্যু, প্রতিবাদে বাড়ি ভাঙচুর

বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:২৩ পিএম
-67b0794990a51.jpg)
বগুড়ার সোনাতলায় আধিপ¬ত্য বিস্তার ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধে পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল হান্নান বাটালু ও তার সমর্থকদের মারধরে আহত যুবদল নেতা রাশেদুল হাসান রাশেদের (২৭) মৃত্যু হয়েছে। এর প্রতিবাদে বাটালু ও তার সমর্থকদের ৪ থেকে ৫টি বাড়ি ভাঙচুর করেছে স্থানীয় বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে মৃত্যু হয় রাশেদুলের।
নিহত রাশেদুল সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা গ্রামের সাইফুল ইসলাম আকন্দের ছেলে এবং ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, জিয়া সাইবার ফোর্স জেলা শাখার সহ-সভাপতি ও সোনাতলা উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন।
পুলিশ, নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, পাকুল্লা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয়রা তিনভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এক পক্ষে পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল হান্নান বাটালু, অপরপক্ষে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী হাসান নারুন এবং আরেকটি পক্ষে বগুড়া শহর জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি এবিম মাজেদুর রহমান জুয়েল।
সূত্রগুলো জানায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে গত এক মাস ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। স্কুলের কমিটি ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রুপগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর মধ্যে গত ৭ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা এবিম মাজেদুর রহমান জুয়েল গ্রামের মসজিদে ইমামতি শেষে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যান। এ সময় যুবদল নেতা রাশেদুল তাদের সঙ্গে ছিলেন।
পরে ওইদিন সন্ধ্যায় রাশেদুল মোটরসাইকেলে পাকুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাটালুর নেতৃত্বে তার লোকজন রাশেদকে ধাওয়া করেন। রাশেদ প্রাণ বাঁচাতে মোটরসাইকেল ফেলে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করান।
এক সপ্তাহ পর শুক্রবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন মৃত্যু হয় রাশেদুলের। তার মৃত্যুর খবরে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা বাটালু ও তার সমর্থকদের ৪ থেকে ৫টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী হাসান নারুন বলেন, ওইদিন সন্ধ্যায় রাশেদ মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় বাটালুর নেতৃত্বে তার লোকজন রাশেদুলকে ধাওয়া করে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
তবে পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল হান্নান বাটালু দাবি করেন, জামায়াত নেতার নেতৃত্বে যুবদল নেতা রাশেদ তার বাড়িতে হামলা করতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় বাজারে মহড়া দেন। জামায়াত নেতা ফিরে যাওয়ার পর কে বা কারা রাশেদের ওপর হামলা করেন। ওই হামলার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
রাশেদুলের মৃত্যুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সোনাতলা থানার ওসি মিলাদুন্নবী। তিনি জানান, এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয়রা ৪ থেকে ৫টি বাড়ি ভাঙচুর করেছে। তবে শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাশেদের মৃত্যুর বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।