ফাঁড়িতে পিটিয়ে হত্যার বিচার চেয়ে ফের রাজপথে রায়হানের মা

সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৩ পিএম

সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে রায়হান নামের এক যুবককে নির্যাতনে হত্যার বিচার দাবিতে আবারও রাজপথে নামলেন তার মা সালমা বেগম। চার বছর পাঁচ মাসেও ছেলে হত্যার বিচার না পেয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
সোমবার বিকালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে ব্যানার হাতে দাঁড়ান তিনি। এ সময় তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা ছিলেন।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর রাতে সিলেট বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় যুবক রায়হানকে।
ব্যানার হাতে রাজপথে অবস্থানকালে রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ হাসিনা শুধু তার বাবার খুনিদের বিচার করেছেন। আর কেউ বিচার পায়নি। রায়হানকে ধরে নিয়ে পুলিশ যখন নির্যাতন করে খুন করে তখন তার মেয়ের বয়স ছিল মাত্র ২ মাস। এখন মেয়েও অনেক বড় হয়ে গেছে। মেয়ে যখন বাবার কথা জিজ্ঞেস করে তখন পরিবারের কেউ কোনো জবাব দিতে পারেন না।
রায়হানের মা দাবি করেন, প্রধান আসামি বন্দরবাজার ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া মামলা আপসের জন্য নানারকম প্রলোভন দেখিয়েছেন। ২০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অফার করেছে। আজীবনের জন্য রায়হানের পরিবারের দায়িত্ব নিতে চেয়েছে; কিন্তু কোনো প্রলোভনে পরিবার আপস করেনি। বিচারের মাধ্যমে রায়হানের খুনিরা ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলবে এমন আশায় অপেক্ষায় আছি আমরা পরিবারের সদস্যরা- এমন বক্তব্য রায়হানের মা সালমা বেগমের।
সালমা বেগম আরও বলেন, চার বছর পাঁচ মাস ধরে ছেলে হারানোর কষ্ট বুকে নিয়ে তিনি আছেন। আশায় আশায় থাকলেও এখনো ছেলে হত্যার বিচার পাননি। আসামিরা মামলা থেকে রক্ষা পেতে নানারকম কূটকৌশল করছে। তিনবার করে সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে চারজন জজ বদলি হয়েছেন; কিন্তু রায়হান হত্যার বিচার হয়নি। বিচার পেলে তিনি মনে কিছুটা হলেও শান্তি পেতেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর রাতে নগরীর আখালিয়ার রায়হান আহমদ নামের এক যুবককে ধরে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর তার পরিবারের কাছে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না পেয়ে ফাঁড়ির ভেতর পৈশাচিক নির্যাতন করা হয় এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রায়হান। পরে ১১ অক্টোবর ভোরে রায়হানের নিথর দেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে বন্দরবাজার ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহি, এএসআই হাসান উদ্দিন, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, টিটু চন্দ্র দাস ও সংবাদকর্মী আব্দুল্লাহ আল নোমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।