Logo
Logo
×

সারাদেশ

৩০ ফুট গভীর কূপের মধ্যে চাপকলই ২০০ মানুষের ভরসা

Icon

মাহবুব পলাশ, মীরসরাই (চট্টগ্রাম)

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম

৩০ ফুট গভীর কূপের মধ্যে চাপকলই ২০০ মানুষের ভরসা

পানি মানুষের জীবনে একটি মূল্যবান সম্পদ; যা ছাড়া বাঁচা অসম্ভব। তাইতো পানির আরেক নাম জীবন; কিন্তু সেই পানি সংকটে ভুগছেন চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ঘেড়ামারা আজিজনগর গ্রামের দুই শতাধিক মানুষ।

ওই গ্রামে ৩০টি পরিবারের জন্য রয়েছে মাত্র একটি চাপকল (নলকূপ)। সেটিও ৭ বছর আগে মাটি খুঁড়ে কূপ তৈরি করে ৩০ ফুট গভীরে বসিয়েছে একটি পরিবার। এখন ওই পরিবারের বসানো চাপকলটিই ২০০ মানুষের ভরসা।

মীরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ঘেড়ামারা আজিজনগর একটি পাহাড়ি গ্রাম। এই গ্রামের পূর্বপাশে রয়েছে প্রায় ৩০টি পরিবার। এসব পরিবারে লোকসংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক; কিন্তু ওই গ্রামে কোনো পুকুর কিংবা টিউবওয়েল নেই। ৭ বছর আগে ওই গ্রামে বসতি শুরু করা মাফিয়া বেগম এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি চাপকল (টিউবওয়েল) বসান। পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় প্রথমে পানি পাননি। পরে ৩০ ফুট মাটি খুঁড়ে বানানো হয় কূপ। ওই কূপে বসানো হয় চাপকলটি। তবুও আশানুরূপ পানি উঠে না ওই কলে।

সরেজমিন আজিজনগর গ্রামে দেখা যায়, কিছুটা সমতল পাহাড়ে অনেকগুলো পরিবার। সাংবাদিক আসার খবর শুনে অনেক নারী ছুটে আসেন তাদের কষ্টের কথা জানাতে। এ সময় প্রত্যেক নারীর হাতে কলসি ও বালতি দেখা যায়।

ওই সময় দেখা যায়, চাপকলের পানি নিয়ে কুয়া থেকে উঠার জন্য মাটি ও পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ১৮টি সিঁড়ি। অনেক বৃদ্ধ নারী পুরুষ নিচে নেমে আবার উঠার ভয়ে ওই চাপকলের পানি নিতে আসেন না।

এ সময় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা ও চাপকল স্থাপনকারী পরিবারের সদস্য মাফিয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রায় ৭ বছর আগে এনজিও থেকে এক বছরের জন্য ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে চাপকলটি বসিয়েছি। প্রথমে অনেক কষ্ট করেও পানি পাওয়া যায়নি। পরে মাটি খুঁড়ে কুয়া তৈরি করে চাপকলটি স্থাপন করা হয়; কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে আশানুরূপ পানি পাওয়া যায় না। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকে কূপটি।

সেখানে আরও কথা হয় কূপের চাপকল থেকে পানি নিতে আসা পঞ্চাশোর্ধ নারী রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের গ্রামটি পাহাড়ি এলাকায় হলেও কোনো বিচ্ছিন্ন জনপদ নয়। তবু এখানে কোনো ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পৌঁছায় না। এখানে চলাচলের ভালো রাস্তা নেই, বিদ্যুৎ নেই, পানির সংকট নিত্যদিনের সঙ্গী। আমরা সরকারের কাছে একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের আবেদন জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পর আমি এলাকাটি পরিদর্শন করেছি। শিগগিরই পানি সংকট নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে মীরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, করেরহাট ইউনিয়নের আজিজনগর এলাকায় একটি পাড়ায় মানুষের পানি সংকটের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই পানি সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব আমরা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম