Logo
Logo
×

সারাদেশ

রাণীনগরে দুই প্রতিবন্ধীর জীবন কাটছে চার দেয়ালের মাঝে, অর্থাভাবে জোটেনি চিকিৎসা

Icon

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৩ পিএম

রাণীনগরে দুই প্রতিবন্ধীর জীবন কাটছে চার দেয়ালের মাঝে, অর্থাভাবে জোটেনি চিকিৎসা

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর স্কুলপাড়ায় দুইজন প্রতিবন্ধীর জীবন কাটছে চার দেয়ালের মাঝে। শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া কিছুই জোটেনি তাদের ভাগ্যে। 

গরিব পরিবারের সন্তান হওয়ায় অর্থাভাবে সন্তানের জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাও করতে পারেনি পরিবার। ফলে দুইজন প্রতিবন্ধীর জীবন এখন চার দেয়ালের মাঝে বন্দি।

সরেজমিন জানা যায়, উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর প্রাথমিক স্কুলপাড়ার দিনমজুর নয়ন প্রামাণিকের প্রতিবন্ধী ছেলে আকাশ কুমার প্রামাণিক। আকাশের জন্ম ১৯৯৬ সালে। জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী। অর্থাভাবে ছেলের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে পারেনি আকাশের পরিবার। তাই ২৮ বছরের বেশি সময় একটি পরিত্যক্ত ঘরেই জীবন কাটছে আকাশের। ঘরেই প্রসাব-পায়খানাসহ খাবার গ্রহণ সবই করতে হয় তাকে। শুধুমাত্র ঘরের একটি ছোট্ট জানালা দিয়ে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে বাহিরের আকাশ ও পরিবেশকে দেখেন আকাশ।

আকাশের মা অলোকা রানী জানান, উন্নত চিকিৎসা পেলে আকাশ সুস্থ হয়ে উঠত; কিন্তু আমরা গরিব মানুষ পরিবারের অন্য সদস্যদের পেটের ভাত জোটাব, নাকি আকাশের উন্নত চিকিৎসা করব। শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতাটুকুই পায় আকাশ। এছাড়া শীতের কম্বল কিংবা অন্য কোনো সহায়তা আমার ছেলের ভাগ্যে জোটে না। যদি আকাশের উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা পেতাম তাহলে ছেলের উন্নত চিকিৎসা করতাম।

আকাশের বাড়ির পশ্চিম দিকে আরেক প্রতিবন্ধী ছেলে দীপন সূত্র। সেও জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। ২০০৬ সালে জন্ম নেওয়া দীপের বাবা একজন ভ্যানচালক। দীপন সূত্রকে হুইলচেয়ারে করে একস্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। দীপও শুধুমাত্র চেয়ে চেয়ে দেখে। উন্নত চিকিৎসা পেলে দীপনও সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। এমনটিই মনে করছে দীপনের পরিবার।

দীপন সূত্রের মা চন্দনা নমসূত্র জানান, দীপন প্রথম সন্তান। দীপন প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়ার পর গরিব মানুষ হিসেবে চেষ্টা করেছি চিকিৎসা করাতে। কিন্তু ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ আমাদের পক্ষে যোগানো সম্ভব হয়নি। তাই উন্নত চিকিৎসার আশা ছেড়ে দিয়েছি। শুধু প্রতিবন্ধী ভাতাটুকু পায় দীপন। সরকারের অন্য কোন সহযোগিতা এখনো দীপনের ভাগ্যে জোটেনি। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেলে ছেলের উন্নত চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করতাম। উন্নত চিকিৎসা পেলে হয়তো দীপন কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠত।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম কচি বলেন, ওই দুইজন প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছে। আগামীতে উন্নত চিকিৎসার কোনো সুযোগ-সুবিধা এলে তাদের জন্য সেই সুযোগ প্রদান করার চেষ্টা করব। এছাড়া আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে নানা সময়ে আসা বিভিন্ন সুবিধাও ওদের দিতে চেষ্টা করব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম