চোর সন্দেহে মানসিক প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:০২ পিএম

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় ‘চোর সন্দেহে’ এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার দুপুরের দিকে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন।
নিহত জহির উদ্দিন বেচু (৪০) উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর লামছি গ্রামের প্রয়াত মো. মোস্তফার ছেলে।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ছবির পাইক গ্রামে ধুমচর ছমিরপাইক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সুন্দলপুর ইউনিয়নের ছবির পাইক গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার দুই ছেলে হাবিব উল্লা (৪৫), অজিউল্লা লিটন (৪০) এবং সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের মৃত মুকবুল আহমেদ চৌকিদারের ছেলে আবদুর রব খান সাহেব (৬৫)।
মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, জহির উদ্দিন বেচুকে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। গুরুতর জখম নিয়ে তিনি কাতরাচ্ছেন আর লোকজন তা দেখলেও কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, শুক্রবার ভোররাতের দিকে একদল লোক চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন জহির উদ্দিন বেচুকে আটকের পর পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। একপর্যায়ে বেচুর চোখে, মুখে, হাতে, পায়েসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে জখম করা হয়। অমানুষিক নির্যাতনের পর একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা তাকে। সকাল ৯টা পর্যন্ত এভাবে গাছের সঙ্গে কাতরাতে থাকেন বেচু। পরে হাসপাতালে নেওয়ার সময় সকাল ১০টার দিকে মিয়ার হাট বাজারের কাছে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
কবিরহাট উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, নিহত জহির উদ্দিন বেচু ২০২০ সাল থেকে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে আসছিলেন।
কবিরহাট থানার ওসি মো. শাহীন মিয়া বলেন, ঘটনার সময় মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিও দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় ৮ জনকে আসামি করে নিহতের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২০-২৫ জনকে।