Logo
Logo
×

সারাদেশ

মুক্তিপণের ৩১ লাখ দিয়েও বাঁচানো গেল না সেলিমকে

Icon

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৭ এএম

মুক্তিপণের ৩১ লাখ দিয়েও বাঁচানো গেল না সেলিমকে

সুন্দর ভবিষ্যতের আশায় ইতালি যেতে চান সেলিম হোসেন (২৫)। লিবিয়া হয়ে ইতালি নেওয়া হবে দালালদের এমন আশ্বাসে টাকা দেয় তার বাবা।  এরপর ইতালির উদ্দেশে বের হন তিনি। কিন্তু তারপর থেকে সেলিমের সঙ্গে পরিবারের আর যোগাযোগ হয়নি।  একপর্যায়ে দালালদের শরণাপন্ন হন বাবা। সেলিম লিবিয়ায় আটকে পড়েছে, টাকা লাগবে এমন কথা বলে দালালেরা। ছেলেকে বাঁচাতে জমি বিক্রি করে টাকা দেন ওই বাবা। তবে ছেলেকে বাঁচাতে পারেননি তিনি। লিবিয়ায় মারা গেছে সেলিম।

ঘটনাটি রাজশাহীর বাঘা পাকুড়িয়া ইউনিয়নের আলাইপুর মহাজনপাড়া গ্রামের। সেলিম ওই গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার ছেলের মৃত্যুর খবর শুনেন এ বাবা।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, সংসারের অভাব মেটানোর জন্য ইতালি যেতে চান সেলিম। এ নিয়ে উপজেলার হরিরামপুর গ্রামের শহীদ হোসেন ও আলাইপুর গ্রামের আবদুল বারির সঙ্গে সাড়ে ১২ লাখ টাকার চুক্তি হয় তার। টাকা পরিশোধের পর ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয় সেলিমকে। কিছুদিন পর লিবিয়ায় আটকা পড়েছে দাবি করে সেলিমের বাবার কাছে ২৫ লাখ টাকা দাবি করে ওই দুজন। উপায় না পেয়ে জমি বিক্রি করে ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেন ওই বাবা। পর্যায়ক্রমে দেওয়া হয় ৩১ লাখ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু এতেও ছেলের মৃত্যুর খবর শুনতে হয়েছে বাবা আফজাল হোসেনকে।

সেলিমের বাবা বলেন, ‘ছেলেকে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়েছে শহীদ হোসেন ও আবদুল বারি।  টাকা দেওয়ার পর সেলিমকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় তারা। পরের দেড় বছরে ছেলের সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি। তাদের কাছে গেলে জানায় সেলিম লিবিয়ায় আটক পড়েছে। ছেড়ে নিতে হলে আরও টাকা লাগবে। তাদের ওপর বিশ্বাস রেখে পর্যায়ক্রমে ৩১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু ছেলের কোনো খবর তারা দেয় না। গত বৃহস্পতিবার তারা জানান, সেলিম লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে স্ট্রোক করে মারা গেছে।’

আফজাল হোসেন আরও বলেন, ‘ছেলেকে শেষবারের মতো দেখতে চেয়েছি। ভিডিওতে অন্তত একবার দেখতে চেয়েছি, কিন্তু তারা দেখায়নি। কোনো উপায় না পেয়ে পরের দিন বাঘা থানায় বিষয়টি জানিয়েছে।’ সেলিম দালাল চক্রের নির্যাতনে মারা গেছে বলে দাবি করেন এ বাবা।

সেলিমের ছোট ভাই ইমন হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তারা ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও দুই বিঘা জমি লিখে নিয়েছেন। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে শহীদ হোসেন ও আবদুল বারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করা হচ্ছে।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম