গৃহবধূ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিকসহ আটক ৩

নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৮ পিএম
-67a3965ce6692.jpg)
নড়াইল থেকে নিখোঁজের পর ফকিরহাটের পুকুর থেকে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় নড়াইল শহরের যুব উন্নয়ন অফিস এলাকা থেকে পরকীয়া প্রেমিক তথা প্রধান আসামি সাইদুর রহমান নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ফকিরহাট জয়পুর এলাকার মাহিন্দ্রাচালক আজিজুর রহমান নয়ন (৩২) ও শহিদুর রহমানকে (৪৫) আটক করা হয়। আসামিরা এ হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আলমগীর কবীর।
তিনি জানান, নড়াইল সদর পৌরসভার আলাদাতপুর গ্রামের মৃত করিম মোল্যার মেয়ে সুরাইয়া শারমিন দৃষ্টির (৩১) সঙ্গে নড়াইল থেকে আটক প্রধান আসামি সাইদুর রহমানের দীর্ঘদিন যাবত পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। গত ৩১ জানুয়ারি দৃষ্টি তার আগের স্বামীকে ছেড়ে সাইদুর রহমানকে বিয়ে করার জন্য বান্ধবীর স্বামী মাহিন্দ্রাচালক আজিজুর রহমান নয়নের বাড়ি বাগেরহাটের ফকিরহাটে আসেন। একই সময় পরকীয়া প্রেমিক সাইদুর রহমানও একই স্থানে আসেন।
ওই রাত ১১টার দিকে বাড়িতেই সুরাইয়া শারমিন দৃষ্টিকে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন সাইদুর রহমান নিজেই। পরে আজিজুর রহমান নয়ন, অপর এক সহযোগী ও মাহিন্দ্রাচালক শহিদুর রহমান তিনজন মিলে পার্শ্ববর্তী জয়পুরের সাবেক ইউপি সদস্য সলেমান শেখের বাড়ির পুকুরে ইট বেঁধে মরদেহ ফেলে দেয়।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে স্থানীয় জয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য সলেমান শেখের পরিবারের লোকজন থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পুকুরে যান। এ সময় পুকুরে মানুষের দুটি ভাসমান পা ভাসতে দেখে তারা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে ফকিরহাট থানা পুলিশের একটি দল সেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে এবং লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে।
মরদেহের শরীরে বেশ কয়েকটি ইট বাঁধা ছিল। বোরকা পরা, পায়ে মোজা ও কাঁধে একটি ব্যাগ ছিল। ওই নারীকে প্রথমে কেউ চিনতে পারেনি। লাশের মুখমণ্ডল কিছুটা বিকৃত হয়ে গেছে। পরে সঙ্গে থাকা ব্যাগে পাওয়া চিরকুট থেকে তার পরিচয় জানা গেছে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার নড়াইলের নিজ বাড়ি থেকে শারমিন নিখোঁজ ছিলেন। শুক্রবার বিকালে বান্ধবীর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন শারমিন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে এ ঘটনায় ওই দিন তার মা সবেজান বেগম নড়াইল সদর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি (জিডি) করেন। নিহত সুরাইয়া নড়াইল সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ে চাকরি করতেন। তার স্বামী মাহফুজ একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাদের একটি সন্তান আছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার নিহতের মা সবেজান বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ফকিরহাট মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জানতে চাইলে নড়াইল সদর থানার ওসি মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে নড়াইল থেকে বুধবার সকালে একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে ফকিরহাট থানায় হস্তান্তর করা হবে। আর ফকিরহাট থেকে আরও দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।