থানার দাবিতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ, যানজটে ভোগান্তি
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম
![থানার দাবিতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ, যানজটে ভোগান্তি](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/04/Untitled-1-Recovered-67a2283bce120.jpg)
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়ায় থানা বাস্তবায়নের দাবিতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন ৬ ইউনিয়নের শত শত বাসিন্দা।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা ঝাউদিয়ায় স্থানান্তরের দাবিতে সদর উপজেলার বৃত্তিপাড়া বাজারে মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা।
প্রশাসনের কাছ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে ৩ ঘণ্টা পর দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি স্থগিত করে সড়ক থেকে সরে যান। এর আগে সড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন যানবাহনের যাত্রীরা।
আন্দোলনকারীরা জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঝাউদিয়া থানার অনুমোদন দিয়েছে। তারপরও একটি মহলের গড়িমসির কারণে এ থানা উদ্বোধন করা হচ্ছে না। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিত হয়ে থানা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার দাবি জানান তারা।
আন্দোলনকারীরা জানান, সন্ত্রাস কবলিত ঝাউদিয়া এলাকায় থানা বাস্তবায়নের জন্য ১৯৯৮ সাল থেকে চলে আসা আন্দোলনের ফসল ঝাউদিয়া থানা।
২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানাকে ঝাউদিয়া এলাকায় স্থানান্তর করে ‘ঝাউদিয়া থানা’ এবং ‘ঝাউদিয়া পুলিশ ক্যাম্পকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করে ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্প’ হিসেবে নামকরণের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব উঠলে তা অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে কুষ্টিয়া জেলার ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানাকে ঝাউদিয়া এলাকায় স্থানান্তর করে ‘ঝাউদিয়া থানা’ নামকরণ এবং ‘ঝাউদিয়া পুলিশ ক্যাম্পকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করে ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্প’ হিসেবে নামকরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি।
এর প্রতিবাদে এবং দ্রুততম সময়ে থানার কার্যক্রম শুরু করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন ঝাউদিয়া, পাটিকাবাড়ি, গোস্বামী দুর্গাপুর, উজানগ্রাম, মনোহরদিয়া, পশ্চিম আবদালপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার বাসিন্দা।
মঙ্গলবার সকালে মিছিল নিয়ে বিত্তিপাড়া বাজারে জড়ো হন তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯টার দিকে শত শত মানুষ প্ল্যাকার্ড-ব্যানার নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। তারা থানা বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে সড়কের ওপর গাছের গুঁড়ি ফেলে এবং টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় পুলিশকে মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
ঝাউদিয়া থানা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শাহরিয়া ইমন রুবেল বলেন, ঝাউদিয়া থানা স্থাপনের সব বিষয় নির্ধারণ হওয়ার পরও পুলিশ সুপার দিনের পর দিন বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখছেন। আজকের আন্দোলনে দায় তাদেরই নিতে হবে।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন, অপরাধ ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, সাড়ে ১২টার পর সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি থানা বাস্তবায়ন কমিটির সাত সদস্যের সঙ্গে পুলিশ সুপার বৈঠক করবেন। এরপর একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
থানা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক হায়াত আলী বিশ্বাস বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে ঝাউদিয়া থানা উদ্বোধন করে কার্যক্রম শুরু না করলে আরও বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ঝাউদিয়ায় থানা স্থানন্তরের নির্দেশনা দিয়ে চিঠি হয়েছে। সেটা করতে একটা প্রক্রিয়া আছে। তবে একই সময়ে আরেকটা চিঠি এসেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় থানা প্রতিষ্ঠার বিষয়ে। সব বিষয় আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।