Logo
Logo
×

সারাদেশ

মতলবে মেঘনা নদীতে বালু তোলা নিয়ে গোলাগুলিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ১

Icon

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২২ পিএম

মতলবে মেঘনা নদীতে বালু তোলা নিয়ে গোলাগুলিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ১

চাঁদপুরের মতলব উত্তরের বাহেরচরে অবৈধ বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে কানা জহির ও কিবরিয়া গ্রুপের গোলাগুলিতে রিফাত ও রাসেল নামে ২ জন নিহত হন। এতে আইয়ুব আলী নামে আরেকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১১ জন গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পরে মতলবের মোহনপুরের কাছাকাছি মেঘনা নদীতে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনাস্থল আব্দুল্লাপুর বলে জানা গেছে। আহতদের পার্শ্ববর্তী মুন্সীগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। 

থানা পুলিশসহ একাধিক সূত্র জানায়, প্রভাব বিস্তারের জেরে মেঘনা নদীতে বালু তোলা নিয়ে দ্বন্দ্বে কানা জহির ও কিবরিয়া গ্রুপের সদস্যরা ২টি করে মোট ৪টি স্পিডবোটযোগে একে অপরের মুখোমুখি হয়। 

উভয় গ্রুপের সশস্ত্র হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন চাঁদপুরের মতলব উত্তরের দশানি গ্রামের রিফাত ও ভাষানচর গ্রামের রাসেল। 

গুলিবিদ্ধ আইয়ুব আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে একটি সূত্র জানায়, ডাকাত দলের সঙ্গে নৌপুলিশের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। যদিও নৌপুলিশের কেউ এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে কানা জহির এবং কিবরিয়া দুজনেই দুর্ধর্ষ নৌডাকাত।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল বলেন, এটি চাঁদপুরের ঘটনা।  গুলিবিদ্ধ আহতদের মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করে, একজনকে ঢাকায় পাঠান। 

আহত ব্যক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেঘনা নদীর চাঁদপুরের মোহনপুর এলাকায় স্পিডবোটে ছিলেন রাসেল, রিফাত, আইয়ুব আলীসহ কয়েকজন। সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ কয়েকটি স্পিডবোট তাদের স্পিডবোটের সামনে আসে। তাৎক্ষণিক রাসেলদের স্পিডবোটকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই তিনজনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাসুদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, রাত ৯টার দিকে তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে দুজন মৃত অবস্থায় ছিলেন। একজন গুরুতর আহত অবস্থায় ছিলেন। তাদের সবার শরীরে ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। এগুলো গুলি কিনা তা আপাতত বলা যাচ্ছে না। সুরতহাল শেষে বলা যাবে। আহত ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনাটি চাঁদপুরে ঘটেছে। তারা সংবাদ পেয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে এসে দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরেছেন। গুলিবিদ্ধ আরেকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অবৈধ বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেঘনা নদীর বিভিন্ন অংশ থেকে প্রতিদিন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার দুটি পক্ষ বালু উত্তোলন করে আসছে। দুটি পক্ষই নৌডাকাত হিসেবে পরিচিত। এ নিয়ে এই দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। যারা হতাহত হয়েছেন, তারা সবাই একপক্ষের লোকজন। ধারণা করা হচ্ছে, বালু উত্তোলনের দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

তবে নিহত রাসেল ফকির বালু তোলার সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন তার মা আনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, রাসেল বৃহস্পতিবার সারা দিন বাড়িতে থেকে মাছ ধরার জাল সেলাই করেছে। সন্ধ্যায় মাছ ধরার জন্য মেঘনা নদীতে গিয়েছিল। নদীতে কয়েকটি স্পিডবোটের বেপরোয়া যাওয়া–আসা দেখতে পান তারা। সাড়ে ৭টার দিকে গোলাগুলির শব্দও পান। পরে তারা জানতে পারেন রাসেলকে গুলি করা হয়েছে।

রাসেলের বাবা কামাল ফকির বলেন, ডাকাতেরা গোলাগুলি করেছে। আমার ছেলে তাদের মধ্যে পড়ে মারা গেছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম