ভৈরবের সুমনের ইতালি যাওয়ার স্বপ্নভঙ্গ
দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় মৃত্যু
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১০ পিএম
ভৈরবের সুমনের (৪২) ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না। দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় তার প্রাণ গেল। ইতালি পৌঁছার আগেই বুধবার রহস্যজনক কারণে তার মৃত্যু হয়। চার মাস আগে সুমন ভৈরব থেকে লিবিয়ায় যায় বলে জানায় তার পরিবার। ভৈরব শহরের লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাহমুদ হোসেনের ছেলে সুমন।
শুক্রবার সকালে তার স্ত্রী তানিজিনা বেগম যুগান্তর প্রতিনিধির কাছে তার স্বামীর মৃত্যুর খবর জানিয়ে দালাল সুইটি বেগমের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন। ভৈরবে সম্ভুপুর গ্রামের চাঁন মিয়ার মেয়ে দালাল সুইটি বেগম।
সুমনের স্ত্রী অভিযোগে বলেন, আমার স্বামী দেশে রাইস মিল ব্যবসা করত। কিন্তু ইদানিং ব্যবসা ভালো ছিল না। এ কারণে সংসারের সুখ-সচ্ছলতা ফেরাতে তিনি ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন দেখে নিজ উদ্যোগে ৪ মাস আগে লিবিয়ায় যান। সেখানে গিয়ে ডাংকিতে এক ধরনের ইতালি যেতে দাদা নামের এক দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এই দালাল সুমনকে বলে ভৈরবের সুইটি বেগমের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে। কথা অনুযায়ী আমি সুইটির সঙ্গে যোগাযোগ করে ১০ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তিতে আমার স্বামীকে লিবিয়া থেকে ডাংকিতে ইতালি পাঠানোর কথা হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী আমি আমার সম্পদ বিক্রিসহ ধারদেনা করে ১০ লাখ টাকা দালাল সুইটিকে পরিশোধ করি। কথা ছিল ২৪ জানুয়ারি আমার স্বামীকে ডাংকিতে তুলে ইতালি পাঠাবে।
২৩ জানুয়ারি রাতে আমি আমার স্বামীর সঙ্গে মোবাইলে বললে তিনি জানান, পরদিন ডাংকিতে উঠে ইতালি রাওয়ানা হবেন। স্ত্রী তানজিনা আরও জানান, দালালকে ১০ লাখ টাকা দেওয়া ছাড়াও অতিরিক্ত আরও ৮ লাখ টাকা তাদের খরচ হয়েছে। বুধবার আমি খবর পাই আমার স্বামী লিবিয়ায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ইতালি যেতে পারেননি।
এরপর ইতালিতে আমি আমার এক আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ২৪ জানুয়ারি তারা কয়েকজন ডাংকিতে ইতালি পৌঁছেছেন; কিন্তু সুমন লিবিয়ায় অসুস্থ হয়ে বা অন্য কোনো কারণে মারা গেছেন। এখন আমি কী করব। আমার তিনটি সন্তান। ধারদেনা কীভাবে পরিশোধ করব, তার লাশ কীভাবে দেশে আসবে বুঝতে পারছি না। লিবিয়ার দালাল এখন আমার ফোন রিসিভ করছেন না। তার ফোন বন্ধ পাচ্ছি।