পিলখানা হত্যাকাণ্ড
১৬ বছর পর ঘরে ফিরলেন বিজিবির কার্পেন্টার
হেলাল মাহমুদ, রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৫ পিএম
নারায়ণ কুমার দাস (৬৩)। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিডিআর) অসামরিক কার্পেন্টার পদে কাজ করতেন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের হত্যা ও বিস্ফোরক মামলার আসামি হয়ে ১৬ বছর জেল কেটেছেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) জামিনে মুক্ত হয়ে ফিরেছেন নিজগ্রাম রাজবাড়ীতে।
বাড়ি ফিরে দেখেন, স্ত্রী নিলু রানী পাল মারা গেছেন। তার দুই সন্তান, ছেলে আনন্দ কুমার ও মেয়ে পাবর্তী পালের দ্বায়িত্ব নিয়েছেন তাদের মামা দুলাল পাল।
জেল জীবনের বর্ণনা দিতে গিয়ে নারায়ণ কুমার দাস বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের সময় আমরা পিলখানাতেই ছিলাম। আমি সদর দপ্তরে নির্মাণ শাখায় কার্পেন্টার (কাঠ মিস্ত্রি) পদে চাকরি করতাম। ওই দিন আমরা যারা সিভিল চাকরিজীবী ছিলাম তারা আত্মরক্ষার জন্য সেখান থেকে পালিয়ে এসেছিলাম। পরে পিলখানায় যোগদানের জন্য আমাদের ডাকা হয়। একটা সময় নির্ধারণ করা হয়। ওই সময়ে আমাদের আবাহনী মাঠে থাকতে বলে এবং পরে আমাদের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন থেকেই আমাদের অনেক মানসিক নির্যাতন করা হতো। সামান্য খিচুড়ি খেতে দিত, সেটা তিন চারজন মিলে খেতাম।
এরপর র্যাব জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়। সবাই বললো আমরা নিরপরাধ, আমাদের কোন হাতিয়ার নেই। তারা বলল কি জানো সেটা বলো। আমরা বললাম কিছুই জানিনা। কারণ আমি যেখানে থাকি সেখান থেকে ঘটনাস্থল প্রায় আধা মাইল দূরে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে আমাদের জেলে পাঠিয়ে দিল।
তিনি বলেন, ওইদিন আমি পিলখানায় কেন ছিলাম, এটাই আমার অপরাধ।
তবে জেলে আমাদের সান্ত্বনা দিয়ে বলা হতো, তোমাদের সাধারণ ক্ষমা করেছে সরকার, নিরাপত্তার জন্য কয়েকদিন জেলে থাকতে হবে। সেই সান্ত্বনায় ১৬ বছর জেলে থাকতো হলো।
এদিকে ১৬ বছরের বর্ণনা দিতে গিয়ে নারায়ণের মেয়ে পাবর্তী পাল বলেন, আমার ভাইকে সাথে নিয়ে প্রথমে বাসা ভাড়া করে থেকেছি। অসহায় হয়ে পরে মামার বাড়ি আশ্রয় নেই। তবে এতদিনের কষ্ট দূর হয়েছে বাবাকে কাছে পেয়ে।
নারায়ণ চন্দ্রের শ্যালক দুলাল পাল যুগান্তরকে বলেন, দুলাভাই কারাভোগের আগে আমার বোন ও তার দুই সন্তান আমার কাছে রেখে যান। আমার সাধ্য মতে তাদের আগলে রেখেছি।