‘গাড়ি চুরির’ অভিযোগে ইজিবাইক চালককে পিটিয়ে হত্যা
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
কক্সবাজার সদরের খুরুশকূলে ‘গাড়ি চুরির’ অভিযোগে এক ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ নালায় ফেলে রাখা হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের আল্লাঅলা হ্যাচারির পাশে একটি নালা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. ইলিয়াছ খান।
নিহত আবুল কালাম (৩৫) কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরপাড়ার মৃত আমানুল হকের ছেলে। এ ঘটনায় আটক জাফর উল্লাহ (৩৮) কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করেন। তার আদি বাড়ি নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলার পশ্চিম চরজব্বর এলাকায়। তিনি নিহতের ইজিবাইক চালক ছিলেন।
নিহতের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ করিম বলেন, আবুল কালাম কক্সবাজার শহর ও খুরুশকূলে ভাড়ায় ইজিবাইক চালাতেন। প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বের হতেন এবং রাত ১০টার মধ্যে ফিরে আসতেন। মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে বের হলেও রাতে আর ফেরেননি। উদ্বিগ্ন স্বজনরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। বুধবার সকালে খুরুশকূলের আল্লাঅলা হ্যাচারির পাশের একটি নালায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা আমাদের খবর দেন। পরে থানায় জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন আগে কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ায় ছুরত আলমের মালিকানাধীন এক গ্যারেজ থেকে একটি ইজিবাইক চুরি হয়। গাড়ির মালিক ছিলেন জাফর উল্লাহ। চুরির ঘটনায় আবুল কালামকে অভিযুক্ত করা হয়।
এ ঘটনায় দুই দিন আগে গ্যারেজ ও গাড়ির মালিকসহ ৪-৫ জন আবুল কালামের বাড়িতে গিয়েছিল এবং চলে যাওয়ার সময় দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। আমরা ধারণা করছি, তাকে গ্যারেজে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, এরপর মরদেহ নালায় ফেলে রাখা হয়েছে।
ওসি ইলিয়াছ খান বলেন, সকালে স্থানীয়দের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, হাত ও পায়ের কয়েকটি নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর জানা যাবে।
তিনি আরও বলেন, সকালে অভিযান চালিয়ে ইজিবাইক মালিক জাফর উল্লাহকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া ঘটনায় জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলছে। গাড়ি চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।