Logo
Logo
×

সারাদেশ

গুরুদাসপুরে পুলিশের বিরুদ্ধে ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Icon

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩২ পিএম

গুরুদাসপুরে পুলিশের বিরুদ্ধে ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

পুলিশে চাকরি করা অবস্থায় মাছ ব্যবসায় যুক্ত হয়েছিলেন পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবির। গ্রামের মাছচাষিদের কাছ থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মাছচাষিরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবির ঢাকা ডিএমপিতে কল্যাণ ও ফোর্স বিভাগে কর্মরত আছেন। তার পরিচিতি নং- বিপি ৯৬১৫১৭৭০৭৭। বর্তমানে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। 

হুমায়ুন গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পুরুলিয়া গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে। মাছচাষিরা আত্মসাৎ করা টাকা ফেরত ও অভিযুক্ত হুমায়ুনের বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চা পুরুলিয়া বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। মানববন্ধনে ভুক্তভোগী মাছচাষিসহ অন্তত ৫ শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

ভুক্তভোগী মাছচাষিরা জানান, গ্রামের ছেলে হওয়ায় বিশ্বাসের সঙ্গে ৪ বছর পূর্বে মাছের ব্যবসা শুরু করেন। শুরুতে হুমায়ুন তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা দিয়ে মাছ কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতেন। প্রথমদিকে নগদ মূল্যে লেনদেন করলেও পরবর্তীতে বিশ্বস্ততার সুযোগে বাকিতে মাছ কিনে ফোন বন্ধ রেখে লাপাত্তা ওই পুলিশ সদস্য। এলাকার ৬০ জন মাছচাষির কাছ থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকার মাছ বাকি নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন হুমায়ন।

এলাকাবাসী ভুক্তভোগী আলম, ফারুক, শরিফুল, শাহাদৎ, মেহেদী, আলামিন, রইসসহ অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার বছর ধরে এলাকায় তিনি ও তার প্রতিনিধির মাধ্যমে মাছের ব্যবসা করেন। কিন্তু গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর দুই মাসে চাষিদের অধিক লাভের প্রলোভন দিয়ে চড়া দামে বাকিতে মাছ কিনে হয়েছেন লাপাত্তা। 

শুধু গুরুদাসপুর নয় পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম, সিংড়া ও চাটমোহর উপজেলার অন্তত শতাধিক চাষি বাকিতে মাছ বিক্রি করে হয়েছেন দেউলিয়া। 

পুরুলিয়ার রইস উদ্দিনের অভিযোগ, তিনি গত মাসের শুরুতে হুমায়ুনের কাছে বাকিতে ৩৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকার ৮ গাড়ি মাছ বিক্রি করেন। ১৫ দিন পর টাকা দেওয়ার কথা বলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে পলাতক রয়েছেন হুমায়ুন। তিনি টাকা ফেরতসহ তার শাস্তির দাবি জানান।

একই এলাকার আলম জানান, তিনিও ওই প্রতারকের কাছে ১৬ লাখ ১১ হাজার টাকার ৪ গাড়ি মাছ বিক্রি করেছেন। টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে তাকে ইসলামী ব্যাংকের একটি চেক দেওয়া হয়। তার মতো অন্তত ১০ জন চাষিকে ব্যাংক চেক দেওয়া হয়। টাকা তুলতে গিয়ে তারা দেখেন প্রতারক হুমায়ন আগেই ওই নম্বরের চেকবহি হারিয়ে গেছে মর্মে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ভুক্তোভোগী চেক নিয়েও প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।

টাকা ফিরে পেতে উজ্জল হোসেন বাদী হয়ে ১৫ জানুয়ারি গুরুদাসপুর থানায় প্রতারক হুমায়ুন ও তার ৮ সহযোগীর নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেন। 

অপরদিকে মকলেছুর রহমান নামে অপর মাছচাষি সিংড়া থানায় এবং পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ দিয়েছেন। এতো অভিযোগের পরেও ওই প্রতারক রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

অভিযুক্ত প্রতারক পুলিশ সদস্য হুমায়ন কবিরের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিয়ে বন্ধ পাওয়ায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাসায় গিয়েও পরিবারের কোনো সদস্যকে পাওয়া যায়নি।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম সারওয়ার হোসেন জানান, হুমায়ন কবিরের নামে মাছচাষিদের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুত্বসহকারে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাকে আটকের চেষ্টাও চলছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম