ডিবির ওসি পরিচয়ে চাঁদাবাজি, অতপর
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:১৮ পিএম
মাদকাসক্ত আসামি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে ডিবির ওসি পরিচয়ে ৪৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার শেখ হাসিনার ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে গ্রেফতার জাকিরকে প্রতারণা ও চাঁদাবাজি মামলায় (যার নং-৪৮) গ্রেফতার দেখিয়ে লক্ষ্মীপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জাকিরের নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাইবান্ধা, কুমিল্লা, রাজবাড়ি, সুনামগঞ্জ ও বগুড়াসহ বিভিন্ন থানায় ১৫টি মামলা রয়েছে।
ডিবি পুলিশ জানায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার হামছাদী ইউপির কাপিলাতুলি গ্রামের মৃত মনতাজ মিয়ার মেয়ের জামাতা পারভেজকে (২৫) গত ২৩ জানুয়ারি তার এলাকায় মাদক সেবন অবস্থায় আটক করে থানায় নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। তার দুই ঘন্টা পরে জাকির আটক পারভেজের স্ত্রীকে ফোন করে বলে যে আমি মামলার বাদী ডিবির ওসি সোহাগ বলছি (প্রতারক জাকির হোসেন)। ৫০ হাজার টাকা দিলে তোমার স্বামীসহ তার সঙ্গে যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলে ফোন কেটে দেয়।
তার কিছুক্ষণ পর আবার টাকা পাঠানোর জন্য একটি বিকাশ নম্বরও দেওয়া হয়। ভয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে প্রতারকের দেওয়া বিকাশ নম্বরে দুই দফায় ৪৪ হাজার টাকা পাঠান আমেনা খাতুন। পরদিন বিষয়টি আমেনা খাতুন ডিবি ও থানাকে জানান তিনি। এরপর লক্ষ্মীপুর ডিবি পুলিশ তদন্ত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার শেখ হাসিনা ব্রিজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করে। এর আগে সে দুটি সিম তিতাস নদীতে ফেলে দেওয়া হয় বলেন।
লক্ষ্মীপুর ডিবি পুলিশের এসআই মো. ফয়েজ আহমেদ বলেন, গ্রেফতার আসামি জাকির স্বীকার করেন সে লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন থানার ও ডিবির ওসি সোহাগ পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে লোকজনের কাছ থেকে হাজার-লক্ষ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে আসছিলেন। চক্রের সদস্যরা কখনো রিকশাচালক, আবার কখনো দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন।
ফয়েজ আহমেদ আরও বলেন, প্রতারণার কৌশল হিসেবে ভুক্তভোগী বা সেবাপ্রার্থী সেজে বিভিন্ন থানায় গিয়ে সেখানকার থানার-ডিবির ওসি, ওসি (তদন্ত) ও অন্য কর্মকর্তাদের নাম সংগ্রহ করেন তারা। এরপরে তারা থানায় সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। তাৎক্ষণিক ওই ঘটনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে বাদী ও বিবাদীর কাছে চাঁদা দাবি করেন। টাকা আদায়ের পরে ব্যবহৃত ফোন বন্ধ করে দেন তারা। সম্প্রতি আমেনা খাতুন নামের এক বৃদ্ধ নারীর আটক মাদকাসক্ত ছেলেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে দুই দফায় ৪৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় সে।