তুই কী করে স্কুলে আসিস দেখে নেব: প্রধান শিক্ষককে কৃষক দল নেতা
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৭ পিএম
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে কৃষক দল নেতা জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ সময় প্রধান শিক্ষককে হুমকি দিয়ে কৃষক দল নেতা বলেন- ‘তুই কী করে স্কুলে আসিস দেখে নেব’।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক।
অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক।
লিখিত অভিযোগে প্রধান শিক্ষক উল্লেখ করেছেন, প্রধান শিক্ষক হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে যাই। এ সময় একজন অভিভাবক মো. আনোয়ার হোসেন নামে তার ছেলের ৭ম শ্রেণিতে ভর্তির বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলে চলে যান। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে দুপুর ১২টার সময় ইউএনও অফিসের নিচে নামলে জালাল ও জাহিদসহ ৫-৬ জন ভর্তির বিষয়ে জানতে চান। আমি তাদের বলি ভর্তির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তখন তারা উত্তেজিত স্বরে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বলেন- ‘আজকের মধ্যে ভর্তি করে না নিলে, তুই কি করে স্কুলে আসিস দেখে নেব। কাল থেকে স্কুলে তালা ঝুলবে।’
এদিকে রোববার উপজেলা নির্বাচন অফিসার কার্যালয়ে গিয়েও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ রয়েছে উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে মৌখিকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন তোতা বলেন, ইউএনও স্যারের সামনে ওই ছাত্রের অভিভাবক, জালাল ও জাহিদসহ ৩-৪ জন ভর্তি করানোর জন্য বলেন। তখন ইউএনও স্যার আমাকে বলেন- আইনগতভাবে যেটা হয় সেটা করবেন। তখন তারা ইউএনও স্যারের সামনে আমাকে বলেন, স্যার ভর্তিটা করিয়ে নেন তা না হলে এরপর কিন্তু ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এরপর ইউএনও স্যারের অফিস থেকে বের হয়ে আসার পর প্রায় ৫০-৬০ জন মানুষের সামনে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে জালাল ও জাহিদ নামের দুই ব্যক্তি। সেই ভাষা মুখে আনা সম্ভব না।
তিনি আরও বলেন, সরকারি স্কুলে ভর্তি করতে কোনো অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয় না। এমন অভিযোগ একদমই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
অভিযুক্ত উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক জালাল উদ্দিন প্রথমে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এরপর তার বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বললে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক ভর্তির বিষয়ে এক অভিভাবকের কাছে ২০ হাজার টাকা চেয়েছেন। সেই বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। এছাড়া আর কিছু না। তিনি প্রধান শিক্ষককে বলেছেন- আওয়ামী লীগ আমলে যেভাবে স্কুল চালিয়েছেন সেভাবে আর চালানো যাবে না। এখন অন্যভাবে চালাতে হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।