Logo
Logo
×

সারাদেশ

মন্দিরের পুরোহিত-সেবক অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, গ্রেফতার ৪

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩২ পিএম

মন্দিরের পুরোহিত-সেবক অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, গ্রেফতার ৪

চট্টগ্রামে একটি মন্দিরের পুরোহিত-সেবকসহ তিনজনকে অপহরণ ও ৯ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার ঘটনায় বায়েজিদের ত্রাস হিসেবে পরিচিত সাইফুল বাহিনীর চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। সাইফুলের ডেরা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃত তিনজনকেও।

শনিবার দুপুরে অপহরণের পর মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ অপহরণকারীদের গ্রেফতার ও অপহৃতদের উদ্ধার করে। খুন গুম অপহরণসহ ২৫ মামলার আসামি বার্মা সাইফুল ও তার বাহিনীর  এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

রোববার দুপুরে নগর পুলিশের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান সিএমপির ডিসি (অপরাধ) রইছ উদ্দিন।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের তিন থানার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মূলহোতা তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সাইফুল ওরফে বার্মা সাইফুল। মতের বিরোধ হলেই সে ধারালো চাপাতি নিয়ে চড়াও হয় প্রতিপক্ষের ওপর। কথায় কথায় ছোড়ে গুলি। সন্ধ্যা নামতেই তারা দলবল নিয়ে মহড়া দেয় বিভিন্ন এলাকায়। শুধু রাত নয়, দিনেও তারা দাপিয়ে বেড়ায় সমানতালে।

৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বার্মা সাইফুল। তার অপকর্মের মধ্যে রয়েছে- জায়গা দখল, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন ইত্যাদি। শনিবার মন্দিরের পুরোহিত-সেবকসহ তিনজনকে অপহরণ করে সাইফুল বাহিনী।

এরপর তাদের লুকিয়ে রাখা হয় তার ‘গোপন ডেরায়’। তাদের পরিবারের কাছে দাবি করা হয় ৯ লাখ টাকা। তাদের মারধর-অত্যাচার করা হয় চাঁদা আদায়ে।

এ ঘটনায় নগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বার্মা সাইফুল বাহিনীর চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাদের ডেরা থেকে উদ্ধার করেছে অপহৃত তিনজনকে।

শনিবার রাতে বার্মা সাইফুলের ‘ডেরায়’ অভিযানে গ্রেফতার চারজন হচ্ছেন- বাছির আহম্মদ রানা (২৭), মো. জিহাদ (২৪), মো. আরিফ (২৪) এবং মো. ইমন হোসেন সাদ্দাম (২৩)।

উদ্ধার হওয়া তিনজন হচ্ছেন- ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের পুরোহিত কেশব মিত্র দাস (৪৩), সেবক রুবেল রুদ্র (৪২) এবং বায়েজিদ থানার হিলভিউ এলাকার বাসিন্দা সমির দাস (৪৫)।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- শনিবার দিনের বিভিন্ন সময় পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ আবাসিক এলাকা থেকে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল ৪টার মধ্যে ওই ব্যক্তিদের অপহরণ করা হয়। এরপর তাদের ওই এলাকার একটি ভবনের চতুর্থ তলায় আটকে রেখে ৯ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এছাড়াও অপহৃত ভিকটিমদের ব্যাপক মারধর করা হয়।

পুলিশ খবর পেয়ে অভিযান চালালে অপহরণকারীরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে এবং শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনের বাগানে ভিকটিমদের লুকিয়ে রাখে। রাতে সিএমপির ডিবি উত্তর-দক্ষিণ বিভাগের একটি টিম পাঁচলাইশ থানার পলিটেকনিক মোড় সংলগ্ন শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনের একটি বাগান থেকে অপহৃত তিন ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় পাঁচটি মোটরসাইকেল, ১০টি কিরিচসহ বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় চারজনকে।

বাছির আহম্মদ রানার বিরুদ্ধে সিএমপির বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা রয়েছে। জিহাদ এবং আরিফের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। মামলাগুলোর বেশিরভাগই চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি এবং চাঁদাবাজির।

সিএমপির ডিসি (অপরাধ) রইছ উদ্দিন জানান, অপহরণ করে যে এলাকায় রাখা হয়েছে সেটি শীর্ষ সন্ত্রাসী বার্মা সাইফুলের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। গ্রেফতার চারজনই পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বার্মা সাইফুলের সহযোগী ছিল। আমরা সাইফুলকে এখনো গ্রেফতার করতে পারিনি। তালিকাভুক্ত যেকোনো সন্ত্রাসীকেই গ্রেফতারে আমাদের প্রচেষ্টা থাকে। বার্মা সাইফুলকেও অতি দ্রুত গ্রেফতারে আমরা চেষ্টা করব। সে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত। তার রাজনৈতিক পরিচয় এখানে মুখ্য নয়। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম