Logo
Logo
×

সারাদেশ

অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ আলমগীরের

Icon

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম

অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ আলমগীরের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তখন তুঙ্গে। আন্দোলনকারীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছিল পুলিশসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। করা হচ্ছিল গুলিও। ঠিক তখনই বিবেগের তাড়নায় রাস্তায় নামেন এক যুবক। হন গুলিবিদ্ধ। ডান হাতের কাঁধে গুলি লাগে তার। বর্তমানে অনেকটাই অকোজো তার সেই হাত। অর্থাভাবে পারছেন না চিকিৎসা করাতে।

এতক্ষণ বলছিলাম ইটভাটার শ্রমিক আলমগীরের কথা।নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের পাথাইরকোনা গ্রামের মৃত মুখসুদ আলীর ছেলে আলমগীর। গত ১৯ জুলাই নরসিংদীতে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।

জানা গেছে, কাজের কারণে পরিবার নিয়ে নরসিংদীর শিবপুরে থাকতেন আলমগীর। ভাড়া বাসায় স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে থাকতেন তিনি। আর পার্শ্ববর্তী একটি ইটভাটায় তিনি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে নিজ বাড়িতে অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় শুয়ে দিন কাটছে তার। ডান হাত অবশ থাকায় তিনি কোনো কাজ করতে পারছেন না।

আলমগীর জানান, ১৯ জুলাই রাতে ইটাখলা মোড় এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ছাত্রজনতার বারবার সংঘর্ষ হচ্ছিল। এতে বেশ কয়েকজন লোক আহত ও নিহত হন। চোখের সামনে পুলিশ মানুষকে গুলি করে মারছে। এ দৃশ্য দেখার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাস্তায় নামেন তিনি। কিছুক্ষণ বাদেই গুলি লাগে আলমগীরের ডান হাতের কাঁধে।

জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ এই যুবক বলেন, নিজের চোখে মানুষকে মরতে দেখেছি। তখন একটি স্টিলের পাত সংগ্রহ করে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নেমে যাই আন্দোলনে। রাত ৮টার দিকে ডান হাতের কাঁধে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হই। ভাইয়ের বাসায় ১২ দিন ছিলাম। সেখানে ভয়ে ভয়ে দিন কেটেছে। কোনো ভালো চিকিৎসা নেওয়া যায়নি। সেখানেও বলা বলি হতে থাকল, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজন লোক ইসলামবাগ এলাকায় থাকে। পরে সেখান থেকে পালিয়ে কিশোরগঞ্জের বোনের বাসায় আশ্রয় নিই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কিশোরগঞ্জে যাই। সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিই।

 

আলমগীর বলেন, ‘চিকিৎসা করতে গিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকার মত ঋণ করেছি। এখন আমার কাছে কোনো টাকা নেই। আমার ডান হাতটা অবশ হইয়া গেছে। সব সময় চিনচিন করে ব্যথা করে।’

ঋণ পরিশোধ ও চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য চান তিনি।

আলমগীরের মা রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে দিন আনে দিন খায়। পুলিশের গুলি খেয়ে ডান হাতটা অবশ হয়ে গেছে। কোনো কাজও করতে পারে না। আমি মা হিসাবে, সরকারের কাছে আমার ছেলে ও পরিবারকে বাঁচানোর জন্য কাছে অনুরোধ জানাই।’

এ বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বর্তমানে পরিবারটি খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। আলমগীর ছাড়াও কেন্দুয়া উপজেলায় আরও অনেকেই আহত হয়েছেন। আহতদের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম