বাড়িঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর মামলার আসামি ক্ষতিগ্রস্তরাই
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৬ পিএম
প্রতীকী ছবি
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম এবং তার স্বজনদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
গত ২১ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) রাতে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের। পক্ষান্তরে, কার্যালয় ভাঙার অভিযোগে ক্ষতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটি সাজানো। শনিবার ইউনিয়ন বিএনপি নেতা এস এম রুবেল আহম্মেদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন, যেখানে আসামি করা হয় ১০ জনকে। যার মধ্যে রয়েছেন কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত।
এদিকে বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় যৌথবাহিনীর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আমিরুল ইসলামের ভাতিজি মদিনা আক্তার।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, হামলায় অংশ নেয় নৈহাটি গ্রামের বাসিন্দারা। এতে নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ইউপি সদস্য কামাল হোসেন, তার ছেলে আকন মিয়া, একই এলাকার রতন মিয়া, তার ভাই হুমায়ূন কবীর, নিউটন, তুষার। বাড়িতে হামলা করে লুটপাট চালিয়ে আগুন দেয় তারা। খবর পেয়ে বারহাট্টা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর গ্রেফতার হন সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম। এরপর জামিনে বের হয়ে তিনি আর এলাকায় যাননি। তার ছোট ভাই আল-আমিন মিয়াও পলাতক। এই সুযোগে হামলাকারীরা ভাঙচুর ও লুটপাট করে তাদের কয়েকটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অভিযোগকারী মদিনা আক্তার বলেন, ‘তারা আমার অসুস্থ বাবাকে মেরেছে। আমার বাসায় থাকা তিন লাখ টাকা ও বাড়ির স্বর্ণালংকার লুটে নিয়েছে। বাড়িতে থাকা মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে। ঘরেও আগুন দিয়েছে। তারা আমাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমি বারহাট্টা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। তারা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।’
বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুরের মামলার বিষয়ে জানতে বিবাদী আমিরুল ইসলামের মোবাইলে ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি ওই সময় বাজারে ছিলাম না। শুনেছি, এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা করেছে তা আমি জানি না।’
এ বিষয়ে বারহাট্টা থানার ওসি মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘ইউপির চেয়ারম্যানের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় একটি অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।