Logo
Logo
×

সারাদেশ

বিদ্যালয় মাঠে ধান ও সবজির হাট, পাঠদান ব্যাহত

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৬ পিএম

বিদ্যালয় মাঠে ধান ও সবজির হাট, পাঠদান ব্যাহত

বগুড়ার কাহালুর দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দীর্ঘদিন ধরে ধান ও সবজির হাট বসায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় হাটটি উচ্ছেদে লিখিত অভিযোগ করেও লাভ হচ্ছে না। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে প্রতিকার পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানা গেছে, কাহালু উপজেলা সদর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে দূর্গাপুর হাট-বাজার অবস্থিত। ১৯৪০ সালে বাজারের কাছেই ৫৩ শতক জমিতে দূর্গাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি হয়। বর্তমানে শিক্ষার্থী প্রায় ৪০০ জন। দীর্ঘদিন ধরে সপ্তাহের মঙ্গলবার ও শুক্রবার স্কুলমাঠে হাট বসে। সকালে ধান ও বিকালে সবজি কেনাবেচা চলে। স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান ও সবজি বিক্রির জন্য বিভিন্ন যানবাহনে স্কুলমাঠের হাটে নিয়ে আসেন। ধান হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাক-ডাক ও চিৎকারে শ্রেণিকক্ষে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট হয়। পাশাপাশি ধুলাবালি ও ময়লা-আবর্জনায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। স্কুলমাঠে হাট বসার কারণে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

হাটবারে দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠে ধান ও সবজির কেনাবেচা চলছে। কৃষকরা রিকশা, ভ্যান ও ভটভটিতে ধান এবং সবজি বিক্রির জন্য হাটে এসেছেন। হাটুরেদের হৈ চৈ’এ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ সরগরম।

এদিকে, হাটের ইজারাদার দূর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন ৫ আগস্টের পর লাপাত্তা। তার পার্টনার নিতাই চন্দ্র জানান, দূর্গাপুর হাটের জায়গা প্রায় এক একর। কিছু স্থানে শেড ও পাকা স্থাপনা নির্মাণ করায় হাটের জায়গা কমে গেছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বসে আসছে। এবার ৪০ লাখ টাকায় হাট ইজারা নেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয় ও হাটের জায়গা সরকারি। তাই স্কুলমাঠ ব্যবহারে স্থানীয়রা কোনোদিন আপত্তি করেননি।

তিনি দাবি করেন, স্কুলমাঠে হাট বসলেও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বা অন্য কোনো কাজে সমস্যা হয় না। এছাড়া, বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বেতন বাবদ মাসে ১২শ’ টাকা পরিশোধ করতে হয়। ইজারার মেয়াদ আর মাত্র তিন মাস আছে। এবার উচ্চ দরে ইজারা নেওয়ায় তাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে।

দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বলেন, স্কুলমাঠে হাট বসায় লেখাপড়ার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। ধুলাবালি ও ধান, সবজি পড়ে থাকায় বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। মাঠের দক্ষিণ পাশে শহিদ মিনারের অমর্যাদা হচ্ছে। হাটুরেরা স্কুলের বাথরুম ব্যবহার করায় তা অপরিষ্কার থাকে। আবার বর্ষার সময় হাটুরে ও ব্যবসায়ীরা বিদ্যালয়ের বারান্দা ও শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়েন। তখন শ্রেণিকক্ষে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ে।

তারা আরও বলেন, হাট বন্ধে প্রধান শিক্ষকের কাছে কয়েক দফা অভিযোগ করেও লাভ হয়নি।

দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণ করা হয়েছে। এরপরও মাঠে হাট বসানো ঠেকানো যাচ্ছে না। ইজারাদার পেশিশক্তির মাধ্যমে স্কুলমাঠে হাট বসান। এছাড়া ইজারাদার প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি।

কাহালু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী মুহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিদ্যালয় মাঠে হাট না বসাতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বেশ কয়েকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। এরপরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

কাহালু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার হাবীব বলেন, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম