ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি, মুক্তি মেলেনি ২৪ লাখেও
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৯ পিএম
উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপের দেশ ইতালিতে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। অর্থাভাবে থাকা পরিবারকে করান রাজিও। বহু কষ্টে অর্থ জোগাড় করে দেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের বন্ধুকে। তবে সেই আশা আজ দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ইতালির কথা বলে দালাল নিয়ে গেছে লিবিয়ায়। করেছে জিম্মি, চেয়েছে টাকা। কয়েকবার টাকা দিলেও মেলেনি মুক্তি, চাচ্ছে আরও। এতক্ষণ বলছিলাম- কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বাইশপাড়া গ্রামের মো. আবু সাইদের ছেলে সাজেদুলের কথা।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, সাজেদুলকে ইতালি পাঠানো নিয়ে দালালের সঙ্গে ১৩ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। তবে তাকে ইতালি না পাঠিয়ে নেওয়া হয়েছে লিবিয়ায়। সেখানে জিম্মি করে চাওয়া হচ্ছে টাকা। ইতোমধ্যে ২৪ লাখ টাকা দেওয়া হলেও মুক্তি পায়নি সাজেদুল। আরও ২২ লাখ টাকা দাবি করছে মাফিয়া চক্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া হচ্ছে নির্যাতনের ফুটেজ। টাকা দেওয়ার জন্য দিয়েছে সাতদিনের আলটিমেটাম। না দিলে দেওয়া হচ্ছে সাজেদুলকে হত্যার হুমকি।
জানা গেছে, উপজেলার বাগুয়ারচর গ্রামের কলিমুদ্দিনের ছেলে মোমিন চাঁনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ছিল সাজেদুলের। মোমিনের মাধ্যমেই ইতালি যাওয়ার কথা ছিল ওই যুবকের। গত রমজানে সাজেদুলকে ইতালি পাঠানোর জন্য বিমানবন্দরে নিয়ে যান মোমিন। সেখানে আরেক দালালের কাছে সাজেদুলকে হস্তান্তর করা হয়। সেই দালাল কৌশলে সাজেদুলকে লিবিয়ায় পাঠায়। সেখানে সাজেদুলকে জিম্মি করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার মোমিনকে একাধিকবার তাগিদ দিলেও এতে তিনি কর্ণপাত করেননি। উলটো দিয়েছেন হুমকি। এমতাবস্থায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।
এ বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফর রহমান বলেন, মৌখিকভাবে অভিযোগটি পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোমিনের বোন খাদিজা ও দুলাভাই আবুল হোসেন ইতালি প্রবাসী। ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এই তিনজন মিলে উপজেলার অন্তত ৫০ জনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এমনকি টাকা ফেরত চাওয়া হলে হুমকি দেন তারা।