বগুড়ায় শেখ হাসিনাসহ ৩৬৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জাহিদ হাসান নামে একজনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ১৬৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ৩৬৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ভিকটিমের বাবা বগুড়ার গাবতলীর দুর্গাহাটা গ্রামের রফিকুল ফকির বৃহস্পতিবার সদর থানায় এ মামলা করেন।
বিকালে থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) একেএম মঈন উদ্দিন এ তথ্য দিয়েছেন।
মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু, জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান শফিক, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল ইসলাম রাজ, শাজাহানপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন ছান্নু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা, সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায়, সাবেক সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আল রাজি জুয়েল, জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মাশরাফী হিরো, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান শান্ত, শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাসিমুল বারী নাসিম, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সাবেক এমপি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, তার ছেলে জেলা যুব সংহতির সভাপতি হোসাইন শরিফ সঞ্চয়, তার শ্যালক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ রিজু, শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান মানিক, সাবেক বিএনপি নেত্রী বিউটি বেগম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্বাহী সদস্য মোবাশ্বের হোসেন স্বরাজ, বগুড়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুল গফুর হাজী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রুমানা আজিজ রিংকি, কাহালু উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান, যুবলীগ নেতা সাবেক পৌর কাউন্সিলর আমিন আল মেহেদী, জেলা তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেকুজ্জামান রাজন, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা প্রমুখ।
বাদী রফিকুল ফকির এজাহারে উল্লেখ করেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে গত ৪ আগস্ট বেলা ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল বের করা হয়। তিনি (বাদী), তার ছেলে জাহিদ হাসান ও অন্যরা বগুড়া শহরের কাঁঠালতলায় পৌঁছলে শেখ হাসিনাসহ প্রধান পাঁচ আসামির নির্দেশে কাটা রাইফেল, ককটেল, হাতবোমা ও লাঠিসোটা হাতে অন্য আসামিরা পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে মিছিলে হামলা চালায়।
৮৭ নম্বর আসামি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মতিয়ার রহমান সানোয়ার হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করলে অনেকে গুরুতর জখম হন। ৮নং আসামি জেলা যুবলীগ সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন আমার ছেলে জাহিদ হাসানকে হত্যার উদ্দেশ্য গুলি করলে ১০-১২টি ছররা গুলি তার ডান পাশে কোমরের নিচে ঊরুতে লেগে রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়। ৮৫নং আসামি আকাশ গুলি করলে অনেকে আহত হন। অন্য আসামিরা বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করলে অনেকে রক্তাক্ত জখম হন। এ সময় ছাত্র-জনতা ধাওয়া করলে আসামিরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। পরে গুলিবিদ্ধ জাহিদ হাসানকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়।
বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) একেএম মঈন উদ্দিন জানান, মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।