Logo
Logo
×

সারাদেশ

কৃষক সমাবেশের সাড়ে ৬৫ লাখ টাকার সরকারি বরাদ্দ চেয়ে চিঠি ভাইরাল

Icon

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪১ পিএম

কৃষক সমাবেশের সাড়ে ৬৫ লাখ টাকার সরকারি বরাদ্দ চেয়ে চিঠি ভাইরাল

কুড়িগ্রাম কৃষক সমাবেশের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের চিঠি দেওয়াকে কেন্দ্র সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। বুধবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ কৃষক মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন গণকমিটির আহবায়ক নাহিদ হাসান নলেজ স্বাক্ষরিত একটি পত্র সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়ে পড়ে।

ছড়িয়ে পড়া চিঠিতে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসককে মাধ্যম করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর সাড়ে ৬৫ লাখ টাকার জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয় গত ২১ জানুয়ারি। এই বরাদ্দ থেকে ব্যয় ধরা হয় মহাসমাবেশে আগতদের ৩০ হাজার কৃষকের জন্য একবেলা খাবার প্রদানের জন্য ৬০ লাখ, ভিআইপি অতিথিদের খাবারের জন্য ৫০ হাজার এবং স্টেজ ও লাইটিংয়ের জন্য ৫ লাখ টাকা।

পত্রে লেখা রয়েছে, কৃষক-জেলে-তাঁতিরা যুগ-যুগান্তের বঞ্চিত ও ভাগ্যহত জনগোষ্ঠী। তাদের দাবি-দাওয়ার ভিত্তিতে আগামী ২৬ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীতে উত্তরবঙ্গ কৃষক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে উপস্থিত থাকবেন রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের সব জেলার কৃষকরা। আশা রাখি, লক্ষাধিক কৃষক এতে উপস্থিত হবে। আমরা তাদের মধ্যে মাত্র ৩০ হাজার কৃষককে একবেলা আহার করাতে ইচ্ছুক।

উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গ কৃষক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক।

সংযুক্তি হিসেবে প্রস্তাবিত বাজেটের কপি রয়েছে। যেখানে ব্যয় বিবরণীতে লেখা আছে ৩০ হাজার জন কৃষক-জেলেদের খাবারে জন্য ২শ টাকা হারে ৬০ লাখ, ভিআইপি অতিথি ১শ জনের খাবারের জন্য ৫শ টাকা হারে ৫০ হাজার টাকা এবং স্টেজ, সাউন্ড সিস্টেম, গেট, লাইটিং, বসার ব্যবস্থা, তোরণ ও অন্যান্য ৫ লাখ টাকা ধরা হয়।

জানা যায়, কৃষক সমাবেশে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এছাড়াও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কারাবন্দি নেতা কনক রহমান, জাতীয় নাগরিক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, লেখক ও সংগঠক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান, রাখাল রাহা, পাভেল পার্থ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি আহমেদ ইসহাক, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাছির উদ্দিন, কৃষক দেলোয়ার জাহানসহ জাতীয় ও স্থানীয় সংগঠক ও বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত থাকবেন।

জেলে-তাঁতি-কৃষক মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন গণকমিটির আয়োজনে আগামী ২৬ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার জোড়গাছে সফিউল আলম রাজা স্টেডিয়ামে উত্তরবঙ্গ কৃষক মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।

চিঠির বিষয় নাহিদ হাসান নলেজ বলেন, আমরা কৃষকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করে আসছি। তারই ধারাবাহিকতার জন্য কৃষক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে আগত কৃষকদের একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে বরাদ্দের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোনো অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়নি। সমাবেশকে বিতর্কিত করতে একটি মহল এমনটি করেছে। অনেক রাজনৈতিক নেতা কিংবা ভিআইপিরা সামান্য কয়েকটি কম্বল বা ত্রাণ দিতে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে হেলিকপ্টার বা গাড়ির বহর নিয়ে যায়। সেই সব বিষয় ভাইরাল হয় না। বরাদ্দ চাওয়া হলেও এখনো কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। তবে তিনি কৃষকের স্বার্থ রক্ষার্থের সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহবান জানান।

তিনি দাবি করেন, সরকার আমাদের আবেদন ন্যায়সঙ্গত এবং আইনানুগ হলে বরাদ্দ দেবেন। আমরা স্বচ্ছতা এবং  জবাবদিহিতা মাধ্যমে ব্যয়িত অর্থের হিসাব সরকারকে দেব। রাষ্ট্রের নাগরিক এবং সংগঠন হিসাবে ন্যায়সঙ্গত দাবি করা নিশ্চয়ই কোনো অন্যায় নয়। যারা হৈ চৈ করছেন তারা ভালো কাজে কৃষকের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে কৃষক সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার পাঁয়তারা করছেন। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক, ভেদাভেদ ভুলে যাই, তারুণ্যের জুলাই বিপ্লবের চেতনা বাস্তবায়নে সবার ঐক্য প্রত্যাশা করছি।

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চিঠি মন্ত্রণালয়ে ফরোয়ার্ড করা হলেও কোনো অর্থ বরাদ্দ আসেনি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম