মেডিকেলে চান্স পেলেন চা দোকানির ছেলে রিফাত
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২১ পিএম
মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে পড়ার চান্স পেয়েছেন রিফাত ব্যাপারী। তিনি মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের মজিদপুর এলাকার চা দোকানদার ইউনুস ব্যাপারীর ছেলে।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক অনন্ত চক্রবর্তী ও অধীর রঞ্জন মণ্ডল বলেন, রিফাত ব্যাপারী খুবই মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। তিনি মেডিকেলে ভর্তির জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন। সম্পূর্ণ নিজের মেধা ও প্রজ্ঞায় রিফাত মেডিকেলে পড়ার চান্স পেয়েছেন। তার বাবা একজন চা ও ভাজাপুড়ি দোকানদার। এলাকায় তারা খুবই সাদাসিধে জীবনযাপন করেন। পরিবারে তিনি ছোট ছেলে। তার আরও এক ভাই রয়েছে। তাদের পরিবারে খুব অস্বচ্ছলতা রয়েছে।
শুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি নিখিল চক্রবর্তী বলেন, রিফাত উপজেলার শুলপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছেন। স্কুলে তিনি কখনো প্রাইভেট পড়েননি। এই মেডিকেলে পরীক্ষা দিয়ে মেধার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি মজিদপুরের তথা আমাদের গর্ব। উপজেলায় তিনি অন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা তার ভবিষ্যৎ সাফল্য কামনা করছি। রিফাত মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় এলাকায় আনন্দ বিরাজ করছে।
রিফাত বলেন, ভবিষ্যতে তিনি পড়তে চান কার্ডিওলজি নিয়ে। অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য কিছু করতে চান।
তিনি বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি বাবাকে সহযোগিতা করতাম, দোকানে বাবার সঙ্গে কাজ করতাম। এতে মোটেই খারাপ লাগত না, ভালো লাগত।
রিফাতের বাবা ইউনুস ব্যাপারী বলেন, ছোট টিনের ঘর ও ভিটা ছাড়া কিছুই নেই তার। অভাবের সংসার। জীবনে কোনোদিন কোনো কিছুর জন্য বায়না করেনি আমার রিফাত। ছোটবেলা থেকেই ছেলেটা খুবই ভালো, পড়তে বলা লাগেনি। চায়ের দোকানে এসে কাজ করেছে আবার পড়াশোনাও করেছে। দোকানে বসে পুরি ও সমুচা বানিয়েছে, বিক্রি করেছে। রিফাত ডাক্তারিতে চান্স পাওয়ায় তিনি ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
রিফাতের মা ঝর্না বেগম বলেন, আমার বড় ছেলেকে অভাবের কারণে পড়াতে পাড়ি নাই, ছোট ছেলে অভাবের মধ্যেই পড়ালেখা করেছে। ছেলে বড় ডাক্তার হোক। আমি খুবই আনন্দিত।
সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার বলেন, রিফাত ব্যাপারী মেধাবী শিক্ষার্থীদের মডেল, আইকন ও অনুপ্রেরণা। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হিসাবে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পাওয়ায় রিফাতকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। এছাড়াও তার মেডিকেলে পড়তে সবসময় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা থাকবে।