Logo
Logo
×

সারাদেশ

দিনদুপুরে ডাকাতি, বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীর নামে মামলা

Icon

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম

দিনদুপুরে ডাকাতি, বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীর নামে মামলা

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কদ্দাচড়া এলাকায় দিনদুপুরে নাছির উদ্দিন নামের এক গরু ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

এ সময় অস্ত্রধারী ডাকাতরা বাড়ির নারী-পুরুষ সদস্যদের ধারালো কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে ও বন্দুকের বাট দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে বাড়ির আলমিরার ভেতরে রক্ষিত নগদ ২০ লাখ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১২টি গরু-মহিষ লুট করে নিয়ে গেছে। 

গরু ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিনের স্ত্রী মুর্শিদা বেগম (৩৫) বাদী হয়ে সোমবার চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে মাতামুহুরি সাংগঠনিক থানা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক বেলাল উদ্দিন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. মোকাদ্দেস, সাহারবিল ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন উদ্দিন, যুবদল নেতা আবদুল মালেক বাবু রিয়াজ উদ্দিন, মোহাম্মদ শিফাত, ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য নুরুচ্ছফা, ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ শাকিব, ফরিদুল আলম, ৯নং ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ কাইছার, বিএনপি নেতা নুরুল হক, ইউনিয়ন ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক আবদুল জলিল, মোহাম্মদ বাপ্পি, ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মারুফুল ইসলাম, ও ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হেলালকে। 

আদালতের বিচারক আনোয়ারুল কবির মামলাটি আমলে নিয়ে এ ব্যাপারে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পুলিশ সুপার কক্সবাজারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিফতাহ উদ্দিন আহমদ।

মামলার বাদী মুর্শিদা বেগম বলেন, আমার স্বামী নাছির উদ্দিন একজন গরু ব্যবসায়ী। আমরা বাড়িতে গরু-মহিষ লালন পালন করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করি। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে অভিযুক্ত ডাকাতেরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অবৈধ অস্ত্রসহ দলবদ্ধ হয়ে গেট ভেঙে আমার বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করে। এ অবস্থায় বাড়িতে থাকা আমার বড় ভাই আবদুল গাফফার (৫৭) ও আমার স্বামী নাছির উদ্দিন (৪০) তাদের বাধা দিতে চেষ্টা করেন। এ সময় ডাকাতরা ধারালো কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে ও বন্দুকের বাট দিয়ে পিটিয়ে আমার ভাই এবং আমার স্বামীকে মারাত্মকভাবে জখম করে।

তিনি বলেন, ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাড়ির আলমিরায় গরু কেনার জন্য রক্ষিত নগদ ২০ লাখ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও ছোট-বড় মিলিয়ে পালিত ১২টি গরু-মহিষ লুট করে নিয়ে যায়। 

মুর্শিদা বেগম এজাহারে দাবি করেন, হামলা তাণ্ডবের শুরুতে পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেই। এরই মধ্যে চকরিয়া থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল আমার বাড়িতে পৌঁছে। ওই সময় ডাকাত সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িতে লুটতরাজ চালালেও পুলিশ ছিল নীরব। এ সুযোগে ডাকাতরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে।

ঘটনার পর পুলিশ ডাকাতরা চলে যাবার পর আহত আমার ভাই আবদুল গাফফার ও আমার স্বামী নাছির উদ্দিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক আবদুল গাফফারকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও নাছির উদ্দিনকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবী হোছাইন চৌধুরী বলেন, ওই দিন মূলত ডাকাত সন্ত্রাসীরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার খোঁজে গিয়েছিল। আমাকে না পেয়ে আমার বোন মুর্শিদা বেগমের বাড়িতে হামলা তাণ্ডব চালিয়ে নারকীয় এই লুটতরাজ করেছে। আমার ভাই ও ভগিনীপতিকে কুপিয়ে জখম করেছে। 

তিনি আরও বলেন, আমার বোনের বাড়িতে ডাকাতি করার পর একই ডাকাত চক্র ওই দিন সন্ধ্যার দিকে সাহারবিলের কোরালখালী এলাকায় পারভেজ উদ্দিনের পশু খামারে ডাকাতি করে। এ সময় ডাকাতরা খামার থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা দামের ৬টি মহিষ লুট করে নিয়ে গেছে।

এ ঘটনায় শনিবার পারভেজের স্ত্রী সেলিনা আক্তার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

ওই অভিযোগে বাদী সেলিনা আক্তার জানিয়েছেন, আমার স্বামীর পশু খামারে ডাকাতির ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ এখনো আইনি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ অবস্থায় থানায় অভিযোগ করে উল্টো আমরা পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

অভিযুক্ত সাহারবিল ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন বলেন, পুলিশ আসামি ধরতে গিয়ে মুরশিদার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। এ সময় ওখানে অসংখ্য মানুষ জড়ো হয়েছে- একপর্যায়ে সেখানে গুলাগুলি হয়। চারিদিকে ছুটাছুটি শুরু হলে কে কী নিয়ে গেছে আমি বলতে পারব না। তবে ডাকাতির ঘটনা সঠিক নয়। মামলা হলে আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে বলে জানান তিনি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম