Logo
Logo
×

সারাদেশ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ

বাবা ডাক আর শোনা হলো না রাকিবের

Icon

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৭ এএম

বাবা ডাক আর শোনা হলো না রাকিবের

আমি বাবা হব, তুমি মা হবে, ঘর আলোকিত করবে আমাদের সন্তান। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাদিয়া আক্তারকে এভাবেই স্বপ্নের কথা বলতেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ নুরে আলম সিদ্দিকী রাকিব। তিনি শহিদ হওয়ার ৬ মাস পর রোববার ভোর ২টা ৩০ মিনিটে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কন্যাসন্তান জন্ম দেন সাদিয়া।  

তিনি জানান, গত বছরের ২০ জুলাই ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের গৌরীপুরের কলতাপাড়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন রাকিব। 

সাদিয়া আরও জানান, তার স্বামী সন্তানকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। ও আসবে, ওর জন্য ঘর সাজাতে হবে। ও আমাকে স্পর্শ করে সন্তানের ছোঁয়া অনুভব করত। কত আবেগ-আপ্লুত ছিল সে। সব স্বপ্ন একটি গুলিতে শেষ হয়ে গেল। সন্তান তার বাবার মুখ দেখতে পারল না। এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বলেন, আমার সন্তানের কী দোষ ছিল, সে কেন এতিম হলো।

রোববার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে সন্তানকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের পুনাইল গ্রামে বাবার বাড়িতে যান সাদিয়া। 

সাদিয়ার বাবা মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, একদিকে কষ্ট, অন্যদিকে আনন্দ! যে সবচেয়ে বেশি আনন্দিত  হওয়ার কথা। সে তো নেই। 

ভাই শামীম আহমেদ বলেন, আমার ভগ্নিপতি শহিদ হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে। আমার ভাগ্নিটা যেন বৈষম্যের শিকার না হয়। সে যেন তার প্রাপ্য অধিকারটুকু পায়। 

মা জাহানারা বেগম বলেন, আমার নাতনি যখন কাঁদছে, আমাদের মনে হচ্ছে ও বাবা বাবা বলে চিত্কার করছে। ওর বাবাও হয়তো ওর কান্নার শব্দ শুনতে পাচ্ছে। 

রাকিব গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের দামগাঁও মধ্যপাড়ার আব্দুল হালিম শেখের ছেলে। তার কন্যাসন্তান হওয়ার খবরে হাসপাতালে ছুটে যান রাকিবের বাবা। 

তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমি দাদুভাইটাকে কোলে নিয়েছি। ও বাবাহারা, আমি সন্তান হারা; আল্লাহ যেন ওকে হেফাজত করেন। 

তিনি আরও বলেন, দুজাহানের শান্তির দূত হিসাবে ছেলেকে পবিত্র কুরআনের হাফেজ বানিয়েছিলাম। ইচ্ছে ছিল ছেলে আমার মৃত্যুর পর আমার জানাজার ইমামতি করবে। একটি বুলেট আমার সেই ছেলেকে কেড়ে নিল। 

রাকিবের মা মোছা. নুরুন নাহার জানান, আন্দোলনের দিন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জন্য ওষুধ আনতে কলতাপাড়া বাজারে গিয়ে রাকিব শহিদ হন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম