সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে: কামাল আহমেদ
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৯ পিএম
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংরক্ষণ ও সমৃদ্ধ করতে প্রেস কাউন্সিল গঠন করা হলেও বিগত দিনে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। এজন্য কার্যকর প্রেস কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি স্থায়ী মিডিয়া কমিশন গঠন এবং নির্যাতিত-নিপীড়িত সাংবাদিকদের পাশে রাষ্ট্রকে দাঁড়ানোর সুপারিশমালা তুলে ধরার কথা জানান।
কামাল আহমেদ বলেন, মানুষ অনলাইনের ওপর নির্ভরশীল হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়েছে। আমরা বিগত ১৫ বছরে মূলধারার সাংবাদিকরা ব্যর্থ হয়েছি রাজনৈতিক কারণে। হঠাৎ করে যেসব অনলাইন মিডিয়া গড়ে উঠেছে, সেসব সংবাদের ওপর বেশি বিশ্বাস করেছে। আমরা রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে মূলধারার সাংবাদিকরা ব্যর্থ হয়েছি। সরকারের বিভিন্ন সরাসরি পদক্ষেপ মামলা মোকদ্দমা ও বিভিন্ন আইন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ ও নিপীড়নের চেষ্টা এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন। বড় বড় করপোরেট মালিকদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মিডিয়াদের ব্যবহার করেছেন তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য। তখন দেখা গেছে মানুষের স্বার্থ মানুষের ভোগান্তি সে কথাগুলো না লিখে তাদের কথাই লিখছেন মালিকদের কথামতো।
তিনি বলেন, এ বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে আসতে গেলে সরকারি যে বিধিমালা রয়েছে এখনই বাস্তবায়ন করা জরুরি। আমরা যেসব সুপারিশের কথা ভাবছি যেমন আপনারা যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন।
তিনি আরও বলেন, সংস্কার কমিশন প্রধান আর বলেন, আপনাদের বিষয়গুলো যথাযথভাবে সরকারের কাছে তুলে ধরতে পারি এবং তাদের সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো সরকারকে মানাতে পারি আমাদের সুপারিশমালা। তাহলে পরিবর্তন সম্ভব এবং অবশ্যই সেই পরিবর্তন আসবে। আপনারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন তুলেছেন ওয়েজ বোর্ডের প্রশ্ন এবং প্রেস কাউন্সিলের প্রশ্ন। ওয়েব বোর্ড গণমাধ্যম সংস্কারে এখতিয়ার নয়।
কামাল আহমেদ বলেন, ওয়েব বোর্ড খুবই টেকনিক্যাল একটি কাজ। এখানে জীবনযাত্রা মানে জন্য কতটুকু ব্যয় করতে হয় একটা পরিবারে। একজন সাংবাদিকের কী কী ঝুঁকি রয়েছে। একজন রিপোর্টারের কী কী দায়িত্ব রয়েছে। যারা প্রতিটি হাউসের ডেক্সে বসে কাজ করে তাদের একই রকম ঝুঁকি নয়। একটি হাউসে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সাংবাদিকরা কর্মরত রয়েছে। বিভিন্ন পদের বিভিন্ন দায়িত্বে বেতন অবকাঠামো ভাগ করা রয়েছে। সুতরাং সেগুলো নির্ধারণের জন্য বিশেষজ্ঞ লাগে পাশাপাশি সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিও দরকার হয়। সেই কারণে ওয়েজ বোর্ডের কাজটি আমাদের নয়।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সম্মানজনক জীবন ধারণের জন্য ন্যূনতম বেতন এবং সম্মানজনক মর্যাদা পায়; সেই বিষয়ে আমরা তুলে ধরব। সেটা না থাকলেই আপনার সামাজিক নিরাপত্তা জীবনের শূন্যতা কোনোটাই নিরাপত্তা রাখতে পারবেন না।
এ সময় বক্তব্য রাখেন- সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক জাহিদ, আখতার হোসেন খান, বেগম কামরুন নেসা হাসান, ফাহিম আহমেদ, মোস্তফা সবুজ ও আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নান, রংপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুব রহমান প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় রংপুর বিভাগের দেড় শতাধিক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।