লেখক ভট্টাচার্যের পুকুরের মাছ মনে করে বিএনপি নেতাদের কাণ্ড
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫০ পিএম
নিষিদ্ধ সংগঠন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের ঘেরের মাছ মনে করে মনিরামপুর উপজেলা জামায়াতের চার নেতার আলম সাধুভর্তি মাছ ছিনতাইয়ের পর স্থানীয় বাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ মাছ লুটের ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন মাছের চার মালিক। মাছ লুটের ঘটনা সিসি টিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে।
শনিবার দুপুরে কালীবাড়ি হতে কপালিয়া বাজারে মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে আলম সাধুভর্তি মাছ আড়তে নেওয়ার পথে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার দুপুরে ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি জানাজানির একপর্যায়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে ওই রাতে সালিশি সভার মাধ্যমে কিছু টাকা ফেরত দেওয়ার পর রোববার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
স্থানীয়রা জানান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের বাড়ি উপজেলার দুবাডাঙ্গা ইউনিয়নের বাহিরঘরিয়া গ্রামে। স্থানীয় ঘুঘুদহ গ্রামে তার একটি মাছের ঘের রয়েছে। ৫ আগস্টের মাছের ঘেরের দেখাভাল করেন স্থানীয় তৌহিদ নামের এক ব্যক্তি। তৌহিদ মাছ বিক্রি করতে গেলে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা বাধা দিয়ে আসছে। ঘটনার দিন তৌহিদ মাছ ধরে বিক্রির জন্য কপালিয়া বাজারে পাঠায়।
এদিকে একই সময় জামায়াতের চার নেতা মাওলানা আবুল বাশার, মাওলানা লিয়াকত আলী, মাওলানা আলী হাসান ও মাওলানা হাশেম আলীর মালিকানাধীন ঘের থেকে মাছ ধরে আলম সাধুতে করে কালীবাড়ি হতে কপালিয়া বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নেওয়ার পথে এই মাছ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় জামায়াত নেতা মাওলানা আবু নসর জানান, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আলম সাধু ভর্তি মাছের গাড়িসহ চালককে আটকায় ৭-৮ যুবক। এ সময় মাছের মালিক জামায়াতের চার নেতার নাম বললেও তারা কর্ণপাত করেনি। মাছ ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সবাই বিএনপির কর্মী বলে জানা গেছে।
দুপুরে রাস্তা থেকে মাছ লুট করে তা কপালিয়া বাজারে বিক্রি করে। লুট হওয়া মাছের বাজার মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা।
নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, জামায়াত নেতা লিয়াকত আলীর মাছ ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনে তারা তৎপর হন। পরে সিসি টিভির ফুটেজ দেখে মাহবুব ও রাজিব নামের দুইজনকে চিহ্নিত করে মাছ বিক্রির টাকা উদ্ধার করে লিয়াকত আলীর কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে। মাহাবুব ও রাজিব বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি সাংবাদিকদের জানান।
উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক আবু নসর বলেন, এলাকায় তাদের তিনটি মাছের ঘের রয়েছে। উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর লিয়াকত আলীসহ কয়েকজন মাছের চাষ করেন। শনিবার ঘের থেকে ১৮-২০ মণ মাছ ধরে আলমসাধুতে কপালিয়া বাজারে আড়তে পাঠানো হয়। রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। পরে মাছ বিক্রির ৮৯ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, মাছ ছিনতাইয়ের ঘটনা জানা নেই। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।