দাদার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে শিশু খুন, আসামিদের ঘরে আগুন দিল বিক্ষুব্ধরা
গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৯ পিএম
গৌরনদীতে শিশু সাফওয়ান সিকদার (৫) হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের ২টি বাসভবন ও ৩টি টিনের ঘরে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
সাফওয়ানের জানাজায় অংশগ্রহণকারী বিক্ষুব্ধ জনতা শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে জানাজার পূর্বে উপজেলার শরিকল ইউনিয়নের মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের গ্রেফতারকৃত আসামি ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও জানাজার পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান আসামি রোমান চৌধুরীর বাসভবনসহ ৫টি ঘরে অগ্নিসংযোগ করেন।
এ সময় আগুন নেভাতে গিয়ে বিক্ষুব্ধদের রোষানলে পড়ে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অফিসার বিপুল হোসেন জানান, বরিশাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার বাদআসর নিহত শিশু সাফওয়ানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশগ্রহণকারী বিক্ষুব্ধ জনতা জানাজার আগে শিশু সাফওয়ান হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামি ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও জানাজার পরে প্রধান আসামি রোমান চৌধুরীর ২টি বাসভবন ও ৩টি টিনের ঘরে অগ্নিসংযোগ করেন।
খবর পেয়ে গৌরনদী ফায়ার স্টেশনের গাড়ি ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত জনতা ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নেভাতে বাধা প্রদান করেন। এ খবর পেয়ে গৌরনদীর ইউএনও আবু আব্দুল্লাহ খান, এসিল্যান্ড মো. রাজিব হোসেন, গৌরনদী সার্কেলের অতিক্তিত পুলিশ সুপার শারমিন সুলতানা রাখী, ওসি মো. ইউনুস মিয়াসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং রাত সাড়ে ১০টায় ডাম্পিংয়ের কাজ শেষ করা হয়।
গৌরনদী থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, নিহত শিশুর লাশ হাসপাতাল মর্গ থেকে এলাকায় নিয়ে এলে শুক্রবার বিকালে জানাজায় অংশ নেওয়া মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ জনতা আসামিদের বসতঘরে আগুন লাগিয়ে দেন।
নিহতের বাবা মো. ইমরান শিকদার বাদী হয়ে ৬ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৯-১০ জনকে আসামি করে ১৭ জানুয়ারি গৌরনদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি একই বাড়ির রোমান চৌধুরী, তার স্ত্রী আঁখি বেগম, বোন রাবিনা বেগম ওরফে লাবিনা বেগম ও শরিকল ইউপির সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে গ্রেফতার করে শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতের বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে দাদার বাড়ি উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামে বেড়াতে এসে শিশু সাফওয়ান শিকদার (৫) গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ১৬ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার ভোরে একই গ্রামের মান্না বেপারীর বাড়ির কাছে রাস্তার ঢাল থেকে শিশু সাফওয়ানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।