Logo
Logo
×

সারাদেশ

নবাবগঞ্জের খানেপুর মাদ্রাসায় খোলা আকাশের নিচে শিশুদের পাঠদান

Icon

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১৯ এএম

নবাবগঞ্জের খানেপুর মাদ্রাসায় খোলা আকাশের নিচে শিশুদের পাঠদান

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের খানেপুর ইসলামী ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় শ্রেণিকক্ষ সংকটে খোলা আকাশের নিচে চলছে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান। রোদ ও শীতে এভাবেই ক্লাশ করছে শিশুরা। এতে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

সরেজমিন দেখা যায়, কুয়াশা ঢাকা শীতের সকালে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ করছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকও ব্যস্ত পাঠদানে। শীতের সঙ্গে তীব্র বাতাসে কষ্ট করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। প্লে শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৭টি শ্রেণিতে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই শতাধিক। মাদ্রাসায় সাতটি কক্ষ প্রয়োজন থাকলেও আছে পাঁচটি। এরই মধ্যে নতুন বছরে ভর্তি হয়েছে শিক্ষার্থীরা। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষকদের।

শ্রেণিকক্ষের সংকট নিরসনে ভবনের দ্বিতীয় তলার পিলার নির্মাণের কার্যক্রম শেষ হলেও অর্থের অভাবে এখন নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানান মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক রাশিম মোল্লা। 

তিনি বলেন, এ বছর ছাত্রসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রেণীকক্ষ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় আমরা এলাকাবাসী ও প্রবাসীদের সহযোগিতায় ভবনের দ্বিতীয়তলার কাজ শুরু করেছি। এরই মধ্যে সব পিলার নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে; কিন্তু অর্থের অভাবে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ রয়েছে। 

তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষের অভাবে ক্লাশ করাতে হচ্ছে বারান্দায়, খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টাঙিয়ে। এ অবস্থায় এলাকাবাসী, প্রবাসী ও বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করছি। 

মাদ্রাসার সহকারী প্রধান শিক্ষক মুফতি কবির আহমেদ বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই শতাধিক। এ বছর আবার নতুন সেশনে ভর্তি হয়েছে। আমাদের শ্রেণিকক্ষ দরকার সাতটি আছে পাঁচটি। শ্রেণিকক্ষের অভাবে ক্লাশ করাতে হচ্ছে বারান্দায়, খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টাঙিয়ে। খুব কষ্ট করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। বাতাসের কারণে শীত বেশি লাগে। সেই সঙ্গে ধুলাবালি তো আছেই। আমরা চাই আমাদের জন্য দ্রুত একটা শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক।

অভিভাবকরা বলেন, এভাবে কি বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারে। শিক্ষকরা অনেক আন্তরিক। তবে শ্রেণি সংকটের কারণে বাচ্চাদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে। গরমের দিনে সূর্যের তাপে বসা যায় না, আবার শীতের মধ্যেও খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ করা যায় না। এছাড়া আমাদের অভিভাবকদেরও বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। 

মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সহ-সভাপতি আফসার উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসা ভবন সংকটের কারণে সবাইকে ভর্তি করা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সামান্য যে বেতন নেওয়া হয়, তা দিয়ে শিক্ষকদের বেতনও হয় না। এলাকাবাসীর আর্থিক সহযোগিতায় শিক্ষকদের বেতন ও অন্যান্য ব্যয় পরিচালিত হয়। এ অবস্থায় ভবনের দ্বিতীয়তলায় পিলার নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। অর্থের অভাবে ছাদ নির্মাণ করা যাচ্ছে না। প্রবাসী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা ছাড়া ভবনের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ড. আবুল হোসেন খন্দকার বলেন, আমি খানেপুর ইসলামিয়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। মাদ্রাসাটির পড়ালেখার মান খুবই ভালো। শিক্ষার্থীরা আরবীর পাশাপাশি বাংলা, অংক ও ইংরেজিতে খুবই পারদর্শী। তবে মাদ্রাসিটিতে শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ সংকট দূরীকরণের লক্ষ্যে মাদ্রাসাটিতে ঊর্ধ্বমুখী ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একটি চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। আশা করি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি বিবেচনায় নিবেন।

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। সরেজমিন পরির্দশন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম