সাবেক এমপি কালামসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দুদকের
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
আবু বাককার সুজন, বাগমারা (রাজশাহী)
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৭ পিএম
![সাবেক এমপি কালামসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দুদকের](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/01/17/bag-pic-678a515fa4592.jpg)
রাজশাহীর তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র থাকাকালে সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে প্রায় ৮৮ লাখ টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পেয়ে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের, উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম এবং রাজশাহী নিউমার্কেট এলাকার ঠিকাদার খালেদ মোহাম্মদ সেলিম।
দুদকের উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তার এক চিঠিতে দুদকের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে বিষয়টি জানিয়েছেন।
রাজশাহী-৪ বাগমারা থেকে আবুল কালাম আজাদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি তাহেরপুর পৌরসভার তিনবারের মেয়র ছিলেন। এমপি হওয়ার পর আবুল কালাম আজাদ উপনির্বাচনে তার স্ত্রী খন্দকার সায়লা পারভিনকে মেয়র করেছিলেন। মাত্র ছয় মাসের এমপি কালাম সাতশ কোটি টাকার মালিক বনে যান বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া কৃষকদের জমি দখল করে নির্বিচারে পুকুর খননের কারণে এলাকায় তিনি ভেকু কালাম নামে পরিচিতি লাভ করেন।
দুদকের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে- আবুল কালাম আজাদ তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র থাকাকালে একটি প্রকল্প থেকেই ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরিবেশ ও জলবায়ু তহবিলে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ১৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদ দেওয়া হয়। তবে উল্লিখিত টাকার চেয়ে কম ব্যয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে বাকি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এতে মেয়র কালামের সঙ্গে জড়িত ছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের, উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম ও ঠিকাদার সেলিম।
এছাড়া কালাম মেয়র থাকাকালে ওই প্রকল্পের ঠিকাদারের কাছ থেকে ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ ৫৫ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ টাকা আদায় করে তা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। কৃষি ও পরিবেশ অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায় ওই আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ে।
এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে দুদকের জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ওই প্রকল্পের মোট ৮৮ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পান। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর দুদকের বিভাগীয় কার্যালয়ে তিনি এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। এরপর ২৭ অক্টোবর ওই প্রতিবেদন বিভাগীয় কার্যালয় থেকে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর মামলার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
এ বিষয়ে দুদকের জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, মামলার অনুমোদনের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। এ ব্যাপারে এখন প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দুই-এক দিনের মধ্যেই মামলা করা হবে।
এদিকে বিল দখলকে কেন্দ্র করে আশরাফুল ইসলাম নামে এক মৎস্যচাষিকে গুলি করে হত্যা এবং গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিমুল ও আব্দুল মতিন নামে দুজনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টাসহ বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার অভিযোগে সাবেক এমপি আবুল কালামের বিরুদ্ধে থানায় ছয়টি মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আটক হয়ে বর্তমানে তিনি রাজশাহী কারাগারে রয়েছেন।