সুদ কারবারির সামনেই যুবকের বিষপানে আত্মহত্যাচেষ্টা
মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:১৭ পিএম
মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার ঝামা মহেশপুর এলাকায় সুদের চাপ সইতে না পেরে সুদে কারবারির সামনেই ইয়াসিন (৩০) নামে এক যুবক বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সন্ধ্যায় তাকে গুরুতর অবস্থায় মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অসুস্থ সুমন ঝামা মহেশপুর এলাকার আব্দুল গনি মোল্যার ছেলে।
এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ইয়াসিন ওই এলাকার আছাদুজ্জামান নুর নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা সুদে নেন ২০২২ সালে। সাপ্তাহিক কিস্তি আকারে প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার টাকা করে সুদ প্রদান করে। এভাবে অন্তত ৪০ সপ্তাহ সুদের টাকা প্রদান করার পর ইয়াসিন সুদের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বিষয়টি ইয়াসিনের বাবা জানার পরে স্থানীয় মোক্তার নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে আসাদুজ্জামান নুরকে আসল টাকা পরিশোধ করে দেন। লেনদেন শেষ করার পরেও টাকার জন্য প্রায়ই ইয়াসিনকে চাপ দিতে থাকেন। এরপর মসজিদের কাজ করার কথা বলে ইয়াসিনের মাধ্যমে তার শ্বশুরবাড়ি এলাকা থেকে ইট ক্রয় করেন আসাদ।
ইটের টাকা চাইতে গেলে আসাদ ইয়াসিনকে বলে তোমার কাছে টাকা পাব সেটি আগে পরিশোধ করো। এ বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। পরে ইয়াসিন আসাদের নিকট টাকা চেয়ে না পাওয়ায় উল্টে সুদের টাকা ফের দাবি করায় আসাদের সামনেই ইয়াসিন বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
স্থানীয় ওয়েল্ডিং ব্যবসায়ী শরাফত বিশ্বাস, আব্দুল্লাহ, স্থানীয় চা বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, আছাদ বিভিন্ন লোকজনকে সুদে টাকা দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন। ঝামা বাজারের প্রতিষ্ঠিত জুতা-স্যান্ডেল ব্যবসায়ী মো. মিরাজ হোসেন নামের এক ব্যক্তি আসাদের নিকট সুদে টাকা নিয়ে ব্যবসা করতেন। সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে সর্বোস্ব হারিয়ে ব্যবসা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
তারা আরও জানান, মিরাজের শোরুমে তালা মারাসহ মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নেয় ওই সুদে ব্যবসায়ী আসাদ।
কসমেটিক্স ব্যবসায়ী সাদিক হোসেন বলেন, ২ লাখ টাকা সুদে নিয়ে ৭৫ হাজার টাকা লাভসহ আসল ২ লাখ টাকা পরিশোধ করা করেছি। তারপরও ৭০ হাজার টাকার একটি চেক এখনো আটকে রেখেছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, তিনি ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসাদকে আসলেরও দ্বিগুণ টাকা দিয়ে সুদমুক্ত হয়েছেন।
অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান নুর তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইয়াসিন আমার নিকট থেকে সুদে কোনো টাকা নেয়নি। সে তার ব্যবসায়ের লভ্যাংশের টাকা দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছিল। আমি কাউকে কোনো সুদে টাকা দেয়নি।
মহম্মদপুর থানার ওসি আব্দুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।