বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দুটি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের পাঁচ মামলায় সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে।

একই সঙ্গে অপর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক ও বহিষ্কৃত শহর শ্রমিক লীগের আহবায়ক আলোচিত তুফান সরকারকে জামিন দেওয়া হয়নি।

বৃহস্পতিবার বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুকান্ত সাহা হাজতে থাকা এসব আসামির জামিনের আবেদনের শুনানি শেষে নামঞ্জুর করেন।

পুলিশ ও এজাহার সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট সকালে বগুড়া শহরের সাতমাথায় জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর সামনে দুর্বৃত্তরা সেলিম হোসেন নামে এক শিক্ষককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পালিকান্দা গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে। একই দিন বেলা ১১টার দিকে শহরের ঝাউতলায় আসামিদের ককটেল, হাতবোমা ও গুলির আঘাতে সদরের এরুলিয়ার বানদীঘি গ্রামের কসাই রিপন ফকির নিহত হন।

এ ব্যাপারে তার স্ত্রী মাবিয়া বেগম সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। যদিও বাদী ও তার স্বজনরা দাবি করেন, রিপন হৃদরোগে মারা গেছেন। সেই সঙ্গে পৃথক হামলা চালিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালে আন্দোলনকারীরা আহত হন। এসব ব্যাপারেও সদর থানায় মামলা করা হয়।

এছাড়া সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপুর বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যাসহ ১৩টি মামলা হয়েছে। র‌্যাব-১২ বগুড়া কোম্পানির সদস্যরা গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে রিপুকে গ্রেফতার করে। তিনি বগুড়া জেলা কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে ঢাকার হাসপাতালে রিং পরানো হয়।

এদিকে ওই পাঁচ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহেনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক এমপি বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু এবং সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুসহ আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতা ও পুলিশের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়। এসব মামলায় ৫৬৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ১৬৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বগুড়ার কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন জানান, সাবেক এমপি রিপুকে ঢাকা থেকে বগুড়া কারাগারে আনা হয়েছে। ধার্য তারিখে তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। এছাড়া অপর মামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক ও বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারের জামিন আবেদনও নামঞ্জুর করা হয়।