খুলনার কাউন্সিলর হত্যায় অনেকের নাম, টিপুকে কক্সবাজার আনেন ঋতু
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম
কক্সবাজারে খুলনার কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী টিপু হত্যার ঘটনায় নতুন তথ্য সামনে এসেছে। গ্রেফতারকৃত তিন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন, যেখানে তারা নিজেদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এছাড়া পাওয়া গেছে অনেকের নাম।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জেলা পুলিশের মুখপাত্র জসিম উদ্দিন জানান, গ্রেফতারকৃত তিন আসামি শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু, ঋতু এবং গোলাম রসুল বুধবার সন্ধ্যায় আদালতে জবানবন্দিতে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, এ হত্যার পরিকল্পনা শুরু হয় প্রায় দুই মাস আগে এবং টিপুকে খুনের উদ্দেশ্যে ফাঁদে ফেলে কক্সবাজার নিয়ে আসেন ঋতু।
তিনি আরও জানান, এ হত্যার পেছনে আরও অনেকের নাম রয়েছে, যাদের নাম পাপ্পু এবং ঋতু তাদের জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে তিনি তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। এটি স্পষ্ট করে যে, হত্যার পেছনে আরও একটি বড় চক্র রয়েছে, যা এখনো তদন্তাধীন।
পুলিশ বলছে, পুলিশ খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার শেখ হাসান ইফতেখার চালু এবং টিপুর কক্সবাজারের বন্ধু মেজবাহ উদ্দিন ভুট্টোর নাম প্রকাশ করেছে। তাদেরও হত্যার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে কিনা তা তদন্তের অংশ হিসেবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অস্ত্র মামলা এবং রিমান্ড আবেদন
শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু এবং গোলাম রসুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলাও দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় তাদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে পুলিশ আরও তথ্য উদ্ধারের আশা করছে, যা এই হত্যার পুরো রহস্য উন্মোচনে সহায়ক হবে।
৫৪ বছর বয়সি গোলাম রব্বানী টিপুকে গত ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন হোটেল সি-গালের সামনে ফুটপাতে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, কারণ এটি একটি জনপ্রতিনিধি এবং সমাজে পরিচিত ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড। গোলাম রব্বানী টিপু খুলনার একটি রাজনৈতিক পরিবার থেকে আসেন এবং তার হত্যাকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিগত শত্রুতা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর, খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার চালু এবং টিপুর বন্ধু মেজবাহ উদ্দিন ভুট্টো গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য রিমান্ড চাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, তবে এখনো রিমান্ড শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।
শুক্রবার গোলাম রব্বানীর ভগিনীপতি মো. ইউনুস আলী শেখ কক্সবাজার সদর মডেল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং মঙ্গলবার মৌলভীবাজার থেকে হত্যায় সরাসরি জড়িত তিনজনকে আটক করেছে। তাদের কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে, যা হত্যার কারণ এবং পরিকল্পনার বিস্তারিত খোলাসা করতে সহায়ক হবে।
এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে যে দীর্ঘ সময় ধরে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের নাম প্রকাশ্যে আসছে, তবে পুলিশ এখনো তাদের সহায়কদের বিরুদ্ধে আরও তথ্য সংগ্রহ করছে। এ ঘটনায় কক্সবাজারের স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এবং অপ্রকাশিত তথ্যগুলো বের করতে তারা কঠোর পরিশ্রম করছে।