কনের পিতা-মাতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪০ পিএম
পটিয়ায় ভুয়া জন্মসনদে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে কনের পিতা ও মাতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। পটিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তাররাহুম আহমেদ গত ১৩ জানুয়ারি এ পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করে গত বছরের ৫ জানুয়ারি নাবালিকা মেয়েকে (কিশোরী) সাবালিকা দেখিয়ে সামাজিকভাবে বিয়ে দেন তার মা-বাবা। ৬ মাস না যেতেই গত বছরের ২৭ জুলাই যৌতুক দাবির অপরাধে বরের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেছিলেন কিশোরীর মা বুলু আক্তার। মামলাটির শুনানিকালে কিশোরীর জন্মসনদ পর্যালোচনা করে আদালত জানতে পারে বিয়ের সময় প্রদত্ত জন্মসনদটি ভুয়া।
জানা গেছে, কিশোরী বিয়ের উপযুক্ত ছিল না। এ কারণে বরের বিরুদ্ধে ২৭ জুলাই কনের মায়ের আদালতে দায়ের করা মামলা আদালতের বিচারক তাররহুম আহমেদ খারিজ করে দেন। সেই সঙ্গে আদেশ দেন নাবালিকা হওয়ার পরও ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করে সাবালিকা দেখিয়ে বিয়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য। আদালতের নির্দেশ পেয়েই পুলিশ কনের বাবা পটিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাবিবুরপাড়ার বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন ও তার স্ত্রী বুলু আক্তারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
বরের বাড়ি উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের আমির আলী ফকিরের বাড়িতে। বর মোহাম্মদ মামনুর রশিদ ওই এলাকার বাসিন্দা ফজল আহমদের ছেলে, পেশায় তিনি ব্যাংকার।
আদালত সূত্রে জানা যায়, যাচাই-বাছাই ছাড়া কিশোরীর বিয়ে রেজিস্ট্রি করার অপরাধে রেজিস্ট্রার (কাজী) সোলাইমান চৌধুরীকেও আদালতে তলব করা হয়। গত বছরের ২৪ জুলাই কাজী আদালতে হাজির হয়ে কনের পিতা ও মাতার উত্থাপন করা জন্মসনদ মোতাবেক বিয়ে নিবন্ধন করা হয় বলে জানান। আদালত ভুয়া জন্মসনদ তৈরিতে কাজীর সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেন। একই দিন আদালত ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করে নাবালিকাকে বিবাহ দেওয়ার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের আদেশ দিলে কিশোরীর বাবা ফরিদ উদ্দিন ও মা বুলু আক্তারের বিরুদ্ধে এসআই আকরাম হোসেন বাদী হয়ে গত বছরের ১৯ আগস্ট মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহেল জানান, ওই মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ভুয়া জন্মসনদ তৈরির সাথে কনের পিতা ও মায়ের সংশ্লিষ্টতা পায়। এ কারণের তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট প্রদান করা হয়।
আইনজীবী শাহীনা আক্তার জানান, পটিয়া থানা পুলিশের দায়ের করা চার্জশিট আদালত গত ১৩ জানুয়ারি গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
বর মামুনুর রশিদ জানান, গত বছরের ৫ জানুয়ারি সামাজিকভাবে তাদের বিয়ের পর মাত্র ১৬ দিন তাদের সংসার হয়েছে। তার স্ত্রী বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। আর মা তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মিথ্যা মামলা করতে আদালতে গিয়েছিলেন। সেখানে বিচারকের হাতেই ভুয়া জন্মসনদ তৈরির বিষয়টি ধরা পড়ে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলার আদেশ দেন।