Logo
Logo
×

সারাদেশ

কর্মকর্তারা ঘুসের দিকে হাত বাড়ালে ভেঙে দেওয়া হবে: ডা. শফিকুর

Icon

মাগুরা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫৬ পিএম

কর্মকর্তারা ঘুসের দিকে হাত বাড়ালে ভেঙে দেওয়া হবে: ডা. শফিকুর

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. মো. শফিকুর রহমান সরকারের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, এই দেশে মানুষ বিচার পায় না। ঘুসের রমরমা বাণিজ্য হয়; কিন্তু আমরা এমন বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাই যেখানে রাষ্ট্রের কোনো বিচারক, কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী ঘুসের টাকায় হাত বাড়ানোর দু:সাহস দেখাবে না। কেউ ঘুসের দিকে হাত বাড়ালে সেই হাত ভেঙে দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার মাগুরায় জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব হুঁশিয়ারি উচ্চারণের পাশাপাশি ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে মানবিক সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

দুপুরে মাগুরা শহরের নোমানি ময়দানে জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক এমবি বাকেরের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সাইদ আহমেদ বাচ্চুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথি বলেন, অতীতে গ্রাম এলাকায় একজন লোক ম্যাট্রিকুলেশন কিংবা এন্ট্রান্স পাশ করলে তার বাড়িতে দৌড়ে যেত তাকে দেখতে, দোয়া দিতে। এখন শিক্ষিত মানুষ দেখলে নিরীহ মানুষ আয়াতুল কুরছি পড়ে বুকে ফুক দেয়। যার কলমের জোর বেশি তিনি জনগণের সম্পদ ততবেশি চুরি করেন। তাদের মধ্যে যারা সৎ দক্ষ তাদেরকে এই সমাজ কোণঠাসা করে রাখে।

আমরা এমন একটি মানবিক সরকার গঠন করতে চাই যেখানে দু:শাসন হবে না, দুর্নীতিও চলবে না। এটি নির্মূল করতে হবে। নাহলে কেউ কোনোদিন স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারবে না।

 

তিনি বলেন, বিগত সরকার দেশে একটি ভয়ের সংস্কৃতি চালু করেছিল। মানুষের মুখে অদেখা তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিল। ভালো লাগলেও মানুষ হাসতে পারতো না। মন্দ কাজের সমালোচনা করা হলে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। জনগণ সভ্য থাকলেও শাসকরা সভ্য ছিলেন না। এজন্য তারা জনগণকে ভালোবাসা দিতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, এই দেশ যারা দফায় দফায় শাসন করেছেন তাদের সবাইকে জনগণের দেখার সুযোগ হয়েছে। এমনকি এক সময় আমাদের দুইজন শীর্ষ দায়িত্বশীল সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। তাদেরকেও দেখার সুযোগ হয়েছে। তখনকার আমির এবং সেক্রেটারি জেনারেল দুইজন পর্যায়ক্রমে তিনটি মন্ত্রণালয়ের সেবা দিয়েছেন। তাদের নিকৃষ্ট দুশমনও বলতে পারেনি যে তাদের মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি ছিল।

জামায়াত আমির বলেন, আগামীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমস্ত ইসলামী দল, দেশপ্রেমিক দল, মানবিক দলকে সঙ্গে নিয়ে সরকার পরিচালনার সুযোগ পায় তাহলে একটি মানবিক দেশ উপহার দেওয়ার চেষ্টা করব। তখন একজন মা ঘরের মধ্যে থাকবেন নিরাপদ, রাস্তায় বের হলে হবেন সম্মানিত, কাজের ময়দানে তিনি হবেন মর্যাদাপ্রাপ্ত। দক্ষতা যোগ্যতা থাকলে সামাজিক কর্মকাণ্ডেও যোগ্যতম জায়গায় তিনি পৌঁছে যাবেন।

বিগত আন্দোলতে জনগণ জানান দিয়েছে তারা চাঁদাবাদমুক্ত, দখলদারমুক্ত, ন্যায় ও সাম্যের একটি বাংলাদেশ চায়। আমরা অতিতে চাঁদাবাজি করিনি, এখন করছি না, ভবিষ্যতেও ইনশাআল্লাহ করব না। নিজেরা যেহেতু চাঁদাবাজি করব না, দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে কাউকে করতেও দেব না। আমরা দখল বাণিজ্য চালাই না, আগামীতে কাউকে সেটি করতে দেওয়া হবে না। আমরা সেই কথা দিচ্ছি।

কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের অন্যতম সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন, যশোর জেলা শাখার সাবেক আমীর ও যশোর কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মো. আজিজুর রহমান, মাগুরা জেলা শাখার সাবেক আমির ও যশোর কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আবদুল মতিন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক জেলা আমির ও যশোর কুষ্টিয়া অঞ্চল সহকারী পরিচালক অধ্যাপক ড. আলমগীর বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় মজলিশের শূরা সদস্য মাওলানা বদরুউদ্দিন।

জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান পরে বিকালে শহরের আল আমিন কমপ্লেক্সে জামায়াতে ইসলামীর নারী সদস্য এবং অমুসলিম সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম