স্থানীয় আধিপত্য ও মীরসরাই সদরে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলায় নিত্যকার বিক্ষিপ্ত মারামারি হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের হামলা ও পালটা হামলায় যুবদলের এক কর্মীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ সময় যুবদল ও ছাত্রদলের আরও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। হামলাকারী একপক্ষের যুবদল নেতাসহ ৪ জনকে আটক করেছে মীরসরাই থানা পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মীরসরাই সদর খেলার মাঠে বাণিজ্য মেলায় এলাকাবাসীর আপত্তি সত্ত্বেও প্রশাসন অনুমতি দেয় নামসর্বস্ব একটি সংগঠনকে। ওই মেলাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই আধিপত্য নিয়ে মারামারিসহ নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার অভিযোগ ওঠে। এরই মধ্যে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার পর মেলায় হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবদলের স্থানীয় কামরুল গ্রুপ ও পৌর বিএনপির সদস্য সচিব জাহিদ হোসেন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। রাত ১১টার দিকে কামরুল গ্রুপের কয়েকজন ছাত্রদল ও যুবদলকর্মী জাহিদ গ্রুপের যুবদল ও ছাত্রদল কর্মীদের ওপর চড়াও হয়ে মীরসরাই সদরের বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে হামলা করে।

এ সময় জাহেদ হোসেন মুন্না (২০) নামে যুবদলকর্মী লাঠি ও ছুরির আঘাতে গুরুতর জখম হওয়ার পর প্রথমে সেবা আধুনিক ও পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় উভয়পক্ষের যুবদল ও ছাত্রদল কর্মী মো. আরাফাত (২৩), আসিফ (২১), হাসান (২১), সজীব (২০), রাহাত (২৪), রাশেদ (২২) ও হৃদয়সহ (২১) অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

নিহত মুন্না নির্মাণসামগ্রী সাপ্লাই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি মীরসরাই পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গোভনীয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে ও জানা গেছে।

পুলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে এক গ্রুপের নেতা মীরসরাই পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক কামরুল হোসেন (২৮), নাজমুস সাকিব মারুফ (২২), মো. শাহ আলম (৪৭), মো. আরমানকে (২৬) আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করে।

এ বিষয়ে নিহত হওয়া যুবক মুন্নার পক্ষে বিএনপি নেতা পৌর বিএনপির সদস্য সচিব জাহিদ হোসাইন বলেন, আসলে ছোটরা ভুল করলে বড়রা তা সংশোধন করিয়ে দেওয়া উচিত। তা না করে বড়রাই হামলা করার ঘটনা নিন্দনীয়।

তিনি বলেন, তবুও যেহেতু সবাই আমাদের দলের আমরা উক্ত ঘটনা মীমাংসা করার চেষ্টা করছি।

মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তন্ময় জামশেদ আলম বলেন, মুন্না নামের একজনকে নিহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। শাকিল নামের একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান মজুমদার বলেন, জাহিদ ও কামরুল অনুসারীদের আধিপত্য বিস্তার থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। যেহেতু কামরুল গ্রুপের হামলায় যুবক নিহত হয়েছেন তাই তাকেই আটক করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে জানান তিনি।