বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে প্রেমের বিয়ের স্বীকৃতি না পেয়ে সুমা আকতার (২৩) নামে এক তরুণী আমরণ অনশনে যাওয়ার আগে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। রোববার দুপুরের এ ঘটনায় তাকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাতে সারিয়াকান্দি থানায় চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সুমা আকতার বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বয়রাকান্দি গ্রামের শাহজাহান মোল্লার মেয়ে। একই গ্রামের গার্মেন্টস কর্মী সাগর মিয়ার (২৫) সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সাগর তাকে ফুসলিয়ে ঢাকায় নিয়ে যায়। গত ২৮ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরদিন ঢাকার বাইপাইল কাজি অফিসে বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছে। এরপর তারা ঘর-সংসার করছিলেন।

সাগর গত ২০ ডিসেম্বর বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দুষ্কৃতকারীদের সহায়তায় সুমার কাছ থেকে তালাকনামায় স্বাক্ষর নেয়। পরে সাগর মিয়া তাকে (সুমা) হত্যার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে সুমা গত ৭ জানুয়ারি নিজ গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন।

রোববার সকালে সুমা তার সংসার ফিরে পেতে তালাক দেওয়া স্বামী সাগরের বাড়িতে আমরণ অনশন করার প্রস্তুতি নেন। পরিবারের কাছে বিদায় নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাস্তা থেকে বাড়িতে ফিরে আসেন। দুপুরে তিনি বাড়িতে বিষপান করেন। পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ব্যাপারে রাতে সারিয়াকান্দি থানায় সাগর মিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।

সুমার বড় ভাই সুজন মিয়া জানান, সাগর তাদের অজান্তে বোনকে বিয়ে করে। আবার সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে হুমকি দিয়ে তালাকনামায় স্বাক্ষর নেয়। এখন বোন সুমাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এ অবস্থায় বোন সুমা তার স্বামীর বাড়িতে আমরণ অনশন করার প্রস্তুতি নিয়েছিল। পরে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তিনি তার বোনের সঙ্গে প্রতারণাকারীর অবিলম্বে গ্রেফতার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত সাগর মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সুমার বিষপানের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে সুমাকে ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাসও দেন; কিন্তু সুমার পরিবারের সঙ্গে টালবাহানা করেন।

সারিয়াকান্দি থানার ওসি জামিরুল ইসলাম জানান, বিয়ে ও ছাড়াছাড়ির ঘটনা ঢাকায় ঘটেছে। তাই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা খুবই কঠিন। তবে মেয়ের নিরাপত্তার জন্য অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিষপানের বিষয়ে তদন্ত করতে এক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।