এসআই শফিকুল হত্যায় অংশ নেন ৭ জন, ৩ জন কোপান
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
নেত্রকোনায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম (৪৮) হত্যায় সাতজন অংশ নেন। এর মধ্যে একজন তাকে চিনিয়ে দেন। একজন কোপানোর নির্দেশ দেন। দুজন রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নেন। আর তিনজন শরিফুলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন।
ওই ঘটনায় গ্রেফতার দুই আসামি সাজিবুল ইসলাম অপূর্ব (২৮) ও বাকীবিল্লাহ (৩০) রোববার সন্ধ্যায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নেত্রকোনা কার্যালয়ের পরিদর্শক ইমদাদুল বাশার।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে ইমদাদুল বাশার বলেন, আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। পূর্বশত্রুতার জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। তবে কেন, কী কারণে, কারা হত্যা করেন, তা তদন্তের স্বার্থে এখনই বলতে রাজি হননি তিনি।
তিনি জানান, এ হত্যার সঙ্গে একজন কুখ্যাত আসামি জড়িত। তার নির্দেশেই এসআই শফিকুল ইসলামকে খুন করা হয়েছে। আর আদালতে জবানবন্দি দেওয়া দুর্গাপুর পৌর শহরের উকিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা শমশের আলী খাঁর ছেলে টিভি মেরামতকারী সাজিবুল ইসলাম এবং ধানশিরা এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহমানের ছেলে মোটর মেরামতকারী বাকীবিল্লাহ একজন খুনিকে মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে নিয়ে শফিকুলকে চিনিয়ে দেন। বাকীবিল্লাহ তার মোটরসাইকেলটি নিজেই চালিয়ে যান। ওই খুনিকে নামিয়ে দিয়ে দুজন রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে পাহারা দেন।
এদিকে শফিকুল হত্যায় দায়ের হওয়া মামলাটি দুর্গাপুর থানা থেকে রোববার দুপুরে পিবিআই নেত্রকোনা কার্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ।
তিনি বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযানও অব্যাহত আছে।
নিহত শফিকুল ইসলাম দুর্গাপুরের চণ্ডীগড় ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি জামালপুর পুলিশ লাইনসের বেতার বিভাগে এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
শফিকুল ইসলাম ছুটি নিয়ে গত বুধবার বাড়িতে আসেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি দুর্গাপুর পৌর শহরের বাগিচাপাড়া এলাকার বাসা থেকে বের হন। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার পর পানমহাল রোড এলাকা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় শফিকুল ইসলামের বাবা শুক্রবার সকালে বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন। শনিবার বিকালে সাজিবুল ইসলাম ও বাকীবিল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সব আসামিকেই আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। তদন্তের স্বার্থে এখনই নাম প্রকাশ করছি না। তবে আশা করছি, অন্য আসামিদেরও দ্রুততম সময়ের মধ্যেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হব।