Logo
Logo
×

সারাদেশ

যশোরে বিএনপির মিলন মেলা

ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সম্মান জানাল বিএনপি

Icon

ইন্দ্রজিৎ রায়, যশোর

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫০ পিএম

ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সম্মান জানাল বিএনপি

যশোরে ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে নির্যাতিত নেতাকর্মীদের নিয়ে ব্যতিক্রমী মিলন মেলা হয়েছে। যশোর নগর ও সদর উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে রোববার পিকনিক স্পট জেস গার্ডেনে মিলন মেলার আয়োজন করা হয়। এতে বিএনপির আড়াই সহস্রাধিক নির্যাতিত নেতাকর্মী ও তাদের স্বজনরা অংশ নেন।

একই সঙ্গে চিকিৎসক, শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, ছাত্রপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে ভিন্নমাত্রা পায় মিলন মেলা। দীর্ঘদিন পর রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের একসঙ্গে পেয়ে আপ্লুত নেতাকর্মীরা।

উন্মুক্ত পরিবেশে খাওয়া-দাওয়া, আড্ডা কুশল বিনিময় আর স্মৃতিচারণ করেন অনেকেই। ভয়ংকর সেইসব দিনের কথা স্মৃতিচারণ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন কেউ কেউ। তাদের একজন যশোর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক ইউনুচ আলী তারা বাবু।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকধারী পুলিশ। ডিবি অফিসে নিয়ে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে পুলিশ। ওইদিনই অপারেশন করে আমার পা কেটে ফেলতে হয়। মিথ্যা অস্ত্র ও নাশকতার মামলা তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ক্র্যাচে ভর করেই তাকে চলতে হচ্ছে। আমার নামে পেন্ডিং মামলাসহ ১৬টি মামলা দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের পর আজকের মিলন মেলায় আমন্ত্রণ পাওয়ায় খুশি তিনি। তার ওপর নির্যাতনের বিচার চাইলেন আল্লাহর কাছে।

সদরের লেবুতলা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক হায়দার আলী বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোট নিয়ে সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছিলাম পরে পুলিশ স্থানীয় বাজার থেকে তুলে এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও নাশকতা মামলার আসামি করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। দীর্ঘ দুই বছর তিন মাস কারাভোগের পর বাড়ি ফিরলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে লাগাতার হামলা মামলার জর্জরিত ছিলাম। নির্যাতিত নেতাকর্মীদের মিলন মেলার আয়োজন করায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

শুধু ইউনুচ আলী কিংবা হায়দার আলী নয়, তাদের মতো বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে রাজনৈতিক কারণে অত্যাচার নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন যশোর নগর ও সদর উপজেলা বিএনপির আড়াই হাজার নেতাকর্মী ও স্বজনদের মিলন মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় অংশ নিয়ে খুশি নেতাকর্মীরা। মিলন মেলা থেকে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা।

এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সদর উপজেলা ও নগর বিএনপির  অনেক নেতাকর্মী রাজপথে ছিলেন। অনেকে মিথ্যা মামলায় জেলে গেছেন। আবার অনেকে শহিদ হয়েছেন। পঙ্গুত্ববরণ করেছেন অনেকেই। আমরা চেয়েছি ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে একটি কাতার আনার। আত্মার আত্মত্যাগকে সম্মান জানানোর জন্য মিলন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। একইসঙ্গে জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি মনে করে, ফ্যাসিবাদের পতনের শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে সম্ভব ছিল না। আমরা বারংবারই সমমনা রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আহবান জানিয়েছি।

তিনি জানান, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সবাই অংশ নিয়েছে। তাই শুধু দলীয় নেতাকর্মী নয়, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া চিকিৎসক, শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, ছাত্র প্রতিনিধি, নারী নেত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্মান জানানোর জন্য আজকের মিলন মেলায় আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তাদের আত্মত্যাগকেও আমরা সম্মান জানাচ্ছি। নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ না থাকলে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন সম্ভব হবে না। এই আয়োজনের মাধ্যমে সেই বার্তা দিতে চাই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম