দোয়ারাবাজার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
৬ বছরেও শেষ হয়নি ভবনের নির্মাণ কাজ
তাজুল ইসলাম, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) থেকে
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০২ পিএম
বহুল প্রতীক্ষিত দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর। উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সাইডিং ঘাটসংলগ্ন হিজলতলায় প্রতিষ্ঠানটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। নির্মাণ কাজের মেয়াদ ছিল (৫৪০ দিন) দেড় বছর। কিন্তু ঠিকাদারের অনিয়ম ও গাফিলতিতে ছয় বছরেও তা সম্পন্ন হয়নি। ফলে পাঠদানের ব্যাঘাত ঘটায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ শিক্ষার্থী, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের ধারণা, মূলত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ঠিকাদারের অনিয়ম আর গাফিলতিই এর জন্য দায়ী।
জানা যায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬২৮ টাকা বরাদ্দে দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচতলা একাডেমিক কাম-চারতলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের সঙ্গে ওয়ার্কশপ ও একতলা সার্ভিস এরিয়াসহ পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুতায়ন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থাকরণ, বাউন্ডারি ওয়াল, অভ্যন্তরীণ রাস্তা এবং গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহের মেসার্স ভাওয়াল কনস্ট্রাকশন ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ঢাকার গুলশান নিকেতন এলাকার এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। তাদের কাছ থেকে লাইসেন্স এনে চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ঠিকাদার মাহতাবুল হাসান সমুজ।
স্থানীয় লেখক ও কবি মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী বলেন, সময়মতো কাজ সম্পূর্ণ হলে চার বছর আগেই পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা যেত। এতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত কাজ সম্পূর্ণ করার দাবি জানাই।
শান্তিপুর গ্রামের সমাজসেবক আব্দুল আওয়াল বলেন, দেড় বছরের কাজে ছয় বছর পার। এসব অনিয়মে প্রশাসনের তদারকির অভাব রয়েছে।
ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী এএসএম নাঈম বলেন, আমি যোগদানের পর গত বছর জানুয়ারিতে শুরু হয় একাডেমিক কার্যক্রম। কাজ শেষ না হওয়ায় শ্রেণিকক্ষ ও অফিস কক্ষ সংকটে পাঠদান ও পাঠদান কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।
নির্মাণ কাজের ধীরগতির ব্যাপারে ঠিকাদার মাহতাবুল হাসান সমুজ বলেন, জমিসংক্রান্ত জটিলতায় কাজ পিছিয়ে গেছে। আশা রাখি এক মাসেই কাজ শেষ হবে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমি সুনামগঞ্জে যোগদানের পর থেকে মাত্র দেড় বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানের কাজের গতি বেড়েছে। এর আগে বিভিন্ন অজুহাতে কাজ বন্ধ ছিল বলে জেনেছি। কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে ঠিকাদারকে তাগিদ দিয়েছি। মাস দুয়েকের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে বলে আমি আশাবাদী।